প্রেম করে বিয়ে, এরপর কোলজুড়ে আসে একটি মেয়ে সন্তান। তবে স্বামী বিদেশে চলে যাবার পর খুটিনাটি বিষয় নিয়ে গৃহবধুর উপর শুরু করে অত্যাচার-নির্যাতন। শেষমেষ যৌতুকের দাবিতে সুমা আক্তারকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। মাদারীপুরের রাজৈরের এই ঘটনার পর পালিয়েছে অভিযুক্তরা। বিচার দাবি করেছেন স্বজনরা। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।
জানা যায়, মাদারীপুরের রাজৈরের বদরপাশা ইউনিয়নের দুর্গাবর্দী এলাকার আজিত কাজীর ছেলে কামরুল কাজীর (২৬) সাথে ভালবেসে দেড় বছর আগে বিয়ে হয় বাজিতপুর ইউনিয়নের কোদালিয়া বাজিতপুর গ্রামের ছলেমান শেখের মেয়ে সুমা আক্তারের (২০)। বিয়ের কিছুদিন পর কাজের সুবাধে কামরুল দক্ষিন আফ্রিকা চলে যায়। এরপর শুরু হয় সুমার উপর অত্যাচার ও নির্যাতন। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কাছে দুচোখের বিষ হয়ে ওঠে সুমা। শেষমেষ মঙ্গলবার বিকেলে যৌতুকের দাবীতে সুমাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে কামরুলের পরিবারের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে অভিযুক্তরা। পরে স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধারের পর বুধবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
নিহত সুমার বড়ভাই অহিদুল শেখ বলেন, আমার বোনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে কামরুলে বাড়ির লোকজন। পরে তারা পালিয়েছে গেছে, এই ঘটনার কঠিন বিচার চাই।
সুমার মা হাসিনা বেগম বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়েকে দুচোখে দেখতে পারতো না কামরুলের পরিবারের লোকজন। নানানভাবে অত্যাচার আর নির্যাতন করতো সুমাকে। মঙ্গলবার তারা আমার মেয়েকে হত্যা করে পালিয়েছে, আমি এ শোক কিছুতেই মানতে পারছি না। এর বিচার চাই।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মনিরুজ্জামান ফকির বলেন, নিহত সুমার, হাফছা নামে ৫ মাসের একটি কণ্যা সন্তান রয়েছে। পরিবারের অভিযোগ রয়েছে সুমাকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন পিটিয়ে হত্যা করেছে। এখনো থানায় লিখিত কোন অভিযোগ করেনি কেউ, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরইমধ্যে নিহতের ময়না তদন্ত জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে পলাতক থাকায় কামরুলের পরিবারের কারই কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে কামরুলের ছোটভাই আবু সাঈদ কাজীর মোবাইল কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি।