মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুর-২ (রাজৈর ও সদর) আসনের ৮ বারের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের বিরুদ্ধে নির্বাচনি আচরণবিধি না মানার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত কয়েক দিন ধরেই অবস্থান করছেন তিনি নিজ সংসদীয় এলাকায়। ১০ দিনের কর্মসূচিও আছে তার এলাকার সফরসূচিতে।
অভিযোগ উঠেছে- এলাকায় সংসদ সদস্য হিসেবে বিভিন্ন কর্মসূচির আড়ালে শাজাহান খান আসলে ছেলের নির্বাচনি প্রচার চালাচ্ছেন। সংসদ সদস্যদের স্বজনরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না বলে আওয়ামী লীগ থেকে নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু শাজাহান খান তা কেয়ারই করছেন না। তার এ কর্মকাণ্ড নিয়ে বিব্রত হওয়ার কথা জানিয়েছে তার দল আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারাও।শাজাহান খানের বড় ছেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আসিবুর রহমান আনারস প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। ভোটে আসিবুরের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পাভেলুর রহমান শফিক খান। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। মোটরসাইকেল প্রতীকে ভোট করছেন তিনি।
পাভেলুর রহমান শফিক খান শাজাহান খানেরই চাচাতো ভাই। তবে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তার অবস্থান শাজাহান খানের প্রতিপক্ষ।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজল কৃষ্ণ দে বলেন, শাজাহান খানের কর্মকাণ্ডে শুধু জেলা আওয়ামী লীগ নয়, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগও বিব্রত। তিনি কোনো কিছুই মেনে চলেন না।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ মোল্লা বলেন, শাজাহান খান ছেলেকে জেতাতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ভোট চাইছেন। বিভিন্ন এলাকায় গোপনে সভা করছেন। তার পক্ষে গ্রামের মুরুব্বিদের ম্যানেজ করে আনতে যা যা করা লাগছে, সবই করছেন। তিনি দলীয় সিদ্ধান্ত মানছেন না। আচারণবিধিরও তোয়াক্কা করছেন না। তার এমন কর্মকাণ্ডে আমরা যারা আওয়ামী লীগের কর্মী আছি, আমরা সবাই বিব্রত হচ্ছি।
তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশের সভাপতি সাখাওয়াত এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ঢাকা থেকে বাড়িতে ফেরার পথে ধুরাইলে রাত ১১টায় একটি জানাজায় অংশ নেন শাজাহান খান। পরে আমার এলাকায় দুজন প্রবীণ ব্যক্তিকে দেখতে যান। তিনি কোনো প্রচারণা চালাননি। নিজের নির্বাচনি এলাকায় সাধারণ মানুষের খোঁজখবর নেওয়া তো অপরাধ নয়। এটি নির্বাচনের অংশ না। ভোটে পরাজয়ের শঙ্কা দেখে প্রতিপক্ষ শাজাহান খানের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে তার দাবি।
পাল্টাপাল্টি অভিযোগ প্রচার শুরুর পর থেকে আসিবুর রহমান তার চাচা পাভেলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ১০টির বেশি অভিযোগ করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। বিপরীতে পাভেলও ভাতিজা এবং ভাই শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ২২টি অভিযোগ করেছেন।
পাভেলুর রহমান বলেন, তিনি (শাজাহান খান) ছেলের পক্ষে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে কাজ করছেন। আচরণবিধি মানছেন না। তার বিরুদ্ধে কমিশনে অভিযোগ দিয়েও সুরাহা হচ্ছে না। আমরা এখন অনেকটা নিরুপায়। সে এখন আচরণবিধি তোয়াক্কা না করে এলাকায় মস্তানি করে বেড়াচ্ছে। নির্বাচনে তার টাকার প্রভাবও দেখাচ্ছে।
আসিবুর বলেন, তারা যে অভিযোগ দিচ্ছে, তারাই সেই অপরাধ করছে। তাদের সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমরা বিধি অনুযায়ী প্রচারণা চালাচ্ছি। আমার বাবা ৮ বারের সংসদ সদস্য। তার জনপ্রিয়তা আমার নির্বাচনকে বেগবান করেছে। তবে তিনি আমার নির্বাচনি কাজে অংশ নেননি।