রফিকউদ্দিন আহমদ: ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ জি এম নিউজ জি এম নিউজ বাংলার প্রতিচ্ছবি প্রকাশিত: ৭:৫৩ অপরাহ্ণ, জুন ৬, ২০২২ | আপডেট: ৭:৫৮:অপরাহ্ণ, জুন ৬, ২০২২ ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিতে বায়ান্নোর ২১শে ফেব্রুয়ারি প্রাণ বিসর্জন দেয় এদেশের বীর সন্তানেরা। ভাষাশহীদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে আমরা পাই প্রাণের ভাষা বাংলা, মা ডাকার অধিকার। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে যারা নিজের প্রাণ দিয়েছেন সেসব শহীদ স্মরণে ফেব্রুয়ারি মাসে ইচ্ছেঘুড়িতে থাকছে ধারাবাহিক বিশেষ আয়োজন-আহমদ, রফিক উদ্দিন (১৯২৬-১৯৫২) ভাষাশহীদ। রফিক একজন বাংলাদেশী ভাষা আন্দোলনকর্মী যিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে স্বীকৃতির দাবিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সৃষ্ট বাংলা ভাষা আন্দোলনে ১৯৫২ সালে নিহত হন। বাংলাদেশে তাকে শহীদ হিসেবে গণ্য করা হয়। প্রারম্ভিক জীবন রফিক বাল্যকালে কিছুটা ডানপিটে ছিলেন। তাই গাছ থেকে পড়ে তার হাত ভেঙ্গে চিকিৎসার জন্য কোলকাতা যান। কোলকাতা আবস্থানের সময়মিত্র ইনিস্টিটিউশনে শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর রফিকউদ্দিনের পিতা ঢাকায় চলে আসেন। এখানে বাবুবাজারে আকমল খাঁ রোডে পারিল প্রিন্টিং প্রেস নামে ছাপাখানা চালু করেন। এখানে রফিক বায়রা স্কুলে ভর্তি হয়ে ১৯৪৯ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বায়রা স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে রফিকউদ্দিন মানিকগঞ্জ ‘দেবেন্দ্র কলেজে’ বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হন। আই.কম. ক্লাস পর্যন্ত পড়লেও পরে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকায় এসে পিতার সঙ্গে প্রেস পরিচালনা করতে শুরু করেন। পরে ঢাকার জগন্নাথ কলেজে ( বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ) ভর্তি হন। ১৯৫২ সালে তিনি জগন্নাথ কলেজের ( বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ) হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন। ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ শহীদ রফিক স্মৃতি জাদুঘর রফিক ভাষা আন্দোলনের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন এবং সক্রিয় একজন আন্দোলনকারী হিসেবে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৫২-র ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সম্মুখের রাস্তায় ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে ছাত্র-জনতা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হোস্টেল প্রাঙ্গনে আসলে পুলিশ গুলি চালায়, এতে রফিকউদ্দিন মাথায় গুলিবিদ্ধ হন এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। মেডিকেল হোস্টেলের ১৭ নম্বর রুমের পূর্বদিকে তার লাশ পড়ে ছিল। ছয় সাত জন আন্দোলনকর্মী তার লাশ এনাটমি হলের পেছনের বারান্দায় এনে রাখেন। তাদের মাঝে ডাঃ মশাররফুর রহমান খান রফিকের গুলিতে ছিটকে পড়া মগজ হাতে করে নিয়ে যান। পরে পুলিশ তার মৃতদেহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যায় এবং রাত ৩টায় সামরিক বাহিনীর প্রহরায় ঢাকার আজিমপুর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়। মৃত্যু পরবর্তী ভাষা আন্দোলনে তার আত্মত্যাগের জন্য ২০০০ সালে বাংলাদেশ সরকারে তাকে মরণোত্তর একুশে পদক প্রদান করে। এছাড়া তার গ্রামের নাম পরিবর্তন করে রফিকনগর করা হয় এবং ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে গ্রামে তার নামে ‘ভাষা শহীদ রফিকউদ্দিন আহমদ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে তার নামে একটি প্রাতিষ্ঠানিক ভবনের নাম ‘ভাষাশহীদ রফিক ভবন’ নামকরণ করা হয়। তার স্মৃতির স্বরণে ‘চাঁদের মত চন্দ্রবিন্দু’ নামে একটি নাটক মঞ্চস্থ হয়|- তথ্য ও সূত্র: ইন্টারনেট আরও পড়ুন লতা মঙ্গেশকরের জীবনী এবার সৌদিতে বাবুগঞ্জ উপজেলা সমিতির কমিটি অনুমোদন