রাজধানীর দক্ষিণখানের তোফাজ্জল চেয়ারম্যানের বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী আফিল মিয়াকে (৫৭) হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এস এম ওয়াহিদ হোসেন ওরফে পুলক নামের এই যুবক হতে চেয়েছিলেন সিরিয়াল কিলার। এছাড়া ঢাকার ডন হওয়ার ইচ্ছে ছিল তার।
ডিবি বলছে, নিহত নিরাপত্তাকর্মী আফিল ছোটবেলায় পুলককে চড়-থাপ্পড় দিতেন। এর প্রতিশোধ নিতেই পুলক তাকে কুপিয়ে হত্যা করেন। বাবা মারা যাওয়ার পর পারিবারিকভাবে অবহেলার শিকার পুলক সিরিয়াল কিলিংয়ের পরিকল্পনা করেন। যার অংশ হিসেবে প্রথমে নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যা করেন।
গ্রেফতারের পর পুলক ডিবিকে বলেন, ‘ইয়াবা সেবন করলে যে পিনিক হয়, মানুষ হত্যা করে তার চেয়ে বেশি পিনিক পেয়েছি।’ শুক্রবার (২২ মার্চ) নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
তিনি বলেন, নিহত আফিল মিয়ার স্ত্রী খোরশেদা খাতুন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলার তদন্তে নেমে হত্যায় জড়িত এস এম ওয়াহিদ হোসেন ওরফে পুলককে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরা বিভাগ।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, দক্ষিণখানের তোফাজ্জল চেয়ারম্যানের বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী আফিল মিয়াকে গত ১৮ মার্চ রাতে অজ্ঞাতপরিচয় আসামিরা গভীর রাতে কুপিয়ে হত্যা করে।
হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেফতার পুলক ছোটবেলায় বাবা হারিয়ে চাচাদের হাতে নির্যাতনের শিকার হন। ছোটবেলায় তাকে ভুক্তভোগী নিরাপত্তাকর্মী চড়-থাপ্পড় মারতেন। এতে পুলকের মধ্যে একটা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এছাড়া তার ভেতরে একটি বিকৃত ইচ্ছার জন্ম হয়। দক্ষিণখানসহ উত্তরা এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করতে সিরিয়াল কিলিংয়ের পরিকল্পনা করেন তিনি।
তার টার্গেট ছিল ৯টি হত্যা। যার প্রথমটির বলি নিরাপত্তাকর্মী আফিল মিয়া। যদি হত্যা করতে পারেন তাহলে সন্ত্রাসী হিসেবে মানুষ তাকে চিনবে, এরপর তার সঙ্গে বডিগার্ড থাকবে। তার কথায় মানুষ উঠবে বসবে। রসু খাঁ, এরশাদ শিকদারের মতো বড় সন্ত্রাসী হওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। এই কথা পুলক তার মাকেও বলেন।
ডিবিপ্রধান বলেন, নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যার আগে ইয়াবা সেবন করেন পুলক। এরপর নিরাপত্তাকর্মীকে হত্যা করেন। আর ইয়াবা সেবনের বিষয়ে পুলক ডিবিকে বলেন- ইয়াবা সেবন করলে যে পিনিক হয়, মানুষ হত্যা করে তার চেয়ে বেশি পিনিক পেয়েছি।
জিজ্ঞাসাবাদে পুলক জানিয়েছেন, তার ডন হওয়ার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু ডিবি তাকে গ্রেফতার করায় তার এই স্বপ্ন অঙ্কুরেই বিনষ্ট হলো। গ্রেফতার পুলক হত্যার বিষয়ে নিজের দায় স্বীকার করেছেন। হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি তার বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। -সূত্র: জাগো নিউজ