মাদারীপুরে দরপত্র ছাড়াই সদর উপজেলার চর গোবিন্দপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের ৪০টি পুরাতন বসতঘর ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে । ইউপি মেম্বারসহ তিন প্রভাবশালীর চাপে ঘরগুলো বিক্রি করতে বাধ্য হন হতদরিদ্ররা। এতে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে অসহায় মানুষগুলো। তবে ঘরগুলো ক্রয়ের বিষয়টি স্বীকার করেছেন অভিযুক্তদের একজন। আর ঘর বিক্রির কোন সুযোগ নেই উল্লেখ করে উপজেলা প্রশাসন বলছে, লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, ২০০১ সালে হতদরিদ্রদের জন্য মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের চরগোবিন্দপুরে একটি গুচ্ছগ্রাম নির্মাণ করে সরকার। লোহার অ্যাঙ্গেলের কাঠামোর ওপর টিনের ছাউনি ও বেড়া দিয়ে তৈরি করা হয় ঘরগুলো। চারপাশের ভিটি পাকা থাকলেও মেঝে ছিল মাটির। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ঘরগুলো বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তাই সেখানে নতুন করে ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয় মাদারীপুর জেলা প্রশাসন। নতুন ঘর নির্মাণ কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। এই সুযোগে অসহায় মানুষদের চাপ প্রয়োগ করে পানির দরে ঘরগুলো বিক্রি করতে বাধ্য করেন খোঁয়াজপুর ইউনিয়ননের আজিজুল আকন, নজরুল সরদার, জাকির হোসেন নামে প্রভাবশালী তিন ব্যক্তি। ৪০টি ঘর বিক্রি করা হয় মাত্র তিনলাখ টাকায়। হাতেগোনা কয়েকজন ৩৭৫০ টাকা করে পেলেও বাকিরা ঘরবিক্রির বিষয়টি জানেনও না। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনা স্থলে গিয়ে জানা গেছে, সোমবার থেকে ঘরগুলো অপসারন কার্যক্রম শুরু হলে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন বাসিন্দারা। অন্যত্র ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন তারা। এ ব্যাপারে মুখ খুলতেও ভয় পাচ্ছেন অসহায় মানুষেরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রকল্পের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, “প্রথম দফায় বেশ কিছু ঘর ভেঙে নেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু বাসিন্দাকে ৩ হাজার ৪ হাজার করে টাকা দিয়েছিল। এখন আরও চল্লিশটি ঘর অপসারণ করে নিয়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু মানুষকে ৩হাজার ৭৫০ টাকা করে দিয়েছে। অনেককে আবার টাকা দেওয়া হয়নি। তারা প্রভাবশালী আর আমরা অসহায় বলে কোন প্রতিবাদ করতে পারি না। ”
এদিকে ঘর ক্রয়ের বিষয়টি স্বীকার করেছেন অভিযুক্তদের একজন নজরুল সরদার। তার দাবি, সবার সম্মতিতেই তিনি ঘর কিনে অপসারণ প্রক্রিয়া শুরু করেন।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব সাংবাদিকদের বলেন, “ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “