মাদারীপুরে কেয়া বিশ্বাস নামে শিক্ষানবিশ এক নার্সকে দায়িত্বপালনের সময় মারধরের অভিযোগ উঠেছে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুনমুন নাহার লিপির বিরুদ্ধে। রোববার দুপুরে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের মহিলা ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পরে হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দিয়ে বিক্ষোভ করেন সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীতার করেছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জেলা সদর হাসপাতালের দৈনিক চারটি শিফটে সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটে ৩০০ জন শিক্ষার্থী শিক্ষানবিশ নার্স হিসেবে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সেবামূলক কাজ করেন। প্রতি শিফটে ৭৫ জন শিক্ষার্থী একদলে হাসপাতলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও সিনিয়র নার্সদের অধীনে কাজ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় রোববার সকালে সরকারি নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী কেয়া বিশ্বাস হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের মহিলা ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালনে যান। এ সময় ওই ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক মুনমুন নাহার লিপি একজন রোগীর চিকিৎসাপত্র আনতে বলে। চিকিৎসাপত্র আনতে দেরি হওয়ায় চিকিৎসাপত্রের সংযুক্ত ক্লিপবোর্ড দিয়ে কেয়া বিশ্বাসের মাথায় ও পিঠে আঘাত করার অভিযোগ ওঠে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এ সময় তাকে মানসিকভাবেও লাঞ্ছিত করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্ত চিকিৎসক মুনমুন নাহার লিপির বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও আবাসিক মেডিকেলে অফিসারের কক্ষ ঘেরাও করেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ২৪ ঘন্টার মধ্যে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়ার ঘোষণাও দেন তারা। পরে তারা জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তার কাছেও এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দেন শিক্ষার্থীরা। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত চিকিৎসক। এদিকে এ ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সিভিল সার্জণ ডা. মুনীর আহম্মেদ খান।
স্টুডেন্ট নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের মাদারীপুরের সভাপতি সাব্বির আহসান বলেন, ‘এই আঘাত কেয়া বিশ্বাসের একা উপর নয়, পুরো নার্সিং সমাজের উপর করা হয়েছে। আমাদের দাবি ওই চিকিৎসকের বিচার নিশ্চিত করতে হবে, একই সঙ্গে প্রশিক্ষণার্থী নার্সদের সঙ্গে নির্যাতন ও লাঞ্ছনা বন্ধ করতে হবে।’
মারধরের শিকার কেয়া বিশ্বাস বলেন, ‘মুনমুন নাহার লিপি ম্যাডান ৬১২ নম্বর রুমে রাউন্ড শেষ করে আমাকে রোগীর চিকিৎসাপত্র ও ফাইল আনতে বললে আমি দ্রুত সেটা নিয়ে আসি। তারপরেই অকারনে আমাকে ক্লিপবোর্ড দিয়ে আঘাত করেন, সবার সামনেই লাঞ্ছিত করেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।’
অভিযোগ অস্বীকার করে চিকিৎসক মুনমুন নাহার লিপি বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর সাথে আমার কোন মারধরের ঘটনা ঘটেনি। সে এবং তার প্রতিষ্ঠানের অন্য শিক্ষার্থীরা তিলকে তাল বানোর চেষ্টা করছে। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মুনীর আহমদ বলেন, এক শিক্ষানবিশ নার্সকে মারধরের ঘটনার লিখিত দিয়েছেন শিক্ষার্থী। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।