মাদারীপুরে পুলিশ হেফাজতে আসামীকে নির্যাতন, এসআইয়ের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা

নাজমুল হক নাজমুল হক

ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক

প্রকাশিত: ১১:১৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০২৩ | আপডেট: ১১:১৭:অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০২৩

মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরের শিবচর থানার এসআই নুর মোহাম্মদের বিরুদ্ধে পুলিশ হেফাযতে এক আসামীকে নির্যাতন করে হাত ভেঙ্গে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় রবিবার দুপুরে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেছে ভুক্তভোগী আকমান মাতুব্বর (৬০) নামে এক কৃষক। এ ঘটনায় বিষয়টি আমলে নিয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অভিজিৎ চৌধুরী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার সরকারেরচর গ্রামের আলাউদ্দিন মাতুব্বরের ছেলে আকমান মাতুব্বরের সাথে একই এলাকার আবুল কালাম আজাদের সাথে জমিজমা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে মামলা করে প্রতিপক্ষরা। সেই মামলায় আকমান মাদবরসহ আর চার আসামীকে গত রবিবার (৯ জুলাই) গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন পুলিশের এস আই নূর মোহাম্মদ। এদের মধ্যে আকমান মাদবরকে পুলিশ হেফাজতে থানার দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে নিয়ে ৫০হাজার টাকা দাবী করে এসআই নূর মোহাম্মদ। পরে টাকার দাবীতে তাঁকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। এতে তার বাম হাত ভেঙে যায়। এছাড়াও ভুক্তভোগীকে নির্যাতন করে থুথু ও প্র¯্রাব চেটে খেতে বাধ্য করা হয়। পরে আকমানসহ ওই চারজন আসামী আদালতে পাঠানো হয়। একপর্যায় নির্যাতের ঘটনা কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকি দেয় এসআই নুর মোহাম্মদ। পরে মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে পুলিশ কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদকে একমাত্র আসামী করে রবিবার আদালতে মামলা দায়ের করে ভুক্তভোগী আকমান মাদবর।
ভুক্তভোগী ও মামলার বাদী আকমান মাদবর বলেন, ‘পুলিশ সদস্য নূর মোহাম্মদ আমাকে থানার একটি রুমে নিয়ে বেঞ্চের নিচে মাথা দিয়ে সারা শরীরে লাঠি দিয়ে পেটায়। পরে প্র¯্রাব ও থুথু ফেলে আমাকে দিয়ে প্র¯্রাব ও থুথু চেটে খেতে বাধ্য করে। অমানসিক নির্যাতন করে। এই ঘটনা কাউকে বললে আবারো নির্যাতন চালানোর হুমকি দেয় তিনি।’
মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবি মো. ইব্রাহিম মিয়া বলেন, পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন করার কোন সুযোগ নেই। যদি নির্যাতন করে তা বেআইনি। পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন নিরধে সুস্পষ্ট আইন রয়েছে।
তবে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে শিবচর থানা এসআই নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘পুলিশে ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতেই এই অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগ সত্য নয়। তাকে মারধর করা হয়নি। সব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।’
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জামাল হোসেন বলেন, ‘ভুক্তভোগীর করা মামলায় মহামান্য আদালত পিবিআইকে আগামী ৩০দিনের মধ্যে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।’

Print Friendly, PDF & Email