সরকারি সহায়তা ছাড়াই চলছে ‘রানাপাশা মাহমুদিয়া রহমানিয়া এতিমখানা’

প্রকাশিত: ৮:০৩ পূর্বাহ্ণ, জুন ১২, ২০২৩ | আপডেট: ৮:০৩:পূর্বাহ্ণ, জুন ১২, ২০২৩

মানব শিশুরা নিষ্পাপ, বেহেশতের ফুল। সে ধনীর দুলালই হোক বা হতদরিদ্র অসহায় মা-বাপ হারা এতিম শিশুই হোক। কিন্তু আমাদের সমাজে অসহায় দরিদ্র এতিম শিশুদের দায়িত্বভার অনেকেই নিতে চাই না। তাই এসব অসহায় এতিম শিশুরা পেটের দায়ে ক্ষুধা নিবারণ করতে পথে পথে ঘুরে বেড়ায়। যে কারণে কেউ কেউ ওই সকল অসহায়, দরিদ্র এতিম শিশুদের টোকাই বা পথশিশু বলে সম্বোধন করে থাকি। যা কোনভাবেই মেনে নিতে পরতেন না ঝালকাঠির জেলার নলছিটির রানাপাশা গ্রামের মরহুম মতিয়ার রহমান মল্লিক। তিনি ঢাকায় একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ি। স্বপরিবারে ঢাকাতে বসবাস করলেও এলাকার অসহায়, দরিদ্র এতিম শিশুদের প্রতি তার মমত্ববোধ ও ভালোবসা থেকেই ২০১৪ইং সালে নিজ এলাকায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘রানাপাশা মাহমুদিয়া এতিমখানা ও হাফেজি মাদরাসা’। এ প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ৩০ জন এতিম শিশু আছে। যারা এই এতিমখানায় থেকে হাফেজি পড়ছেন। তাদের ভরণ পোষন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেই করা হচ্ছে।
সরেজমিন গিয়ে এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় প্রতিষ্ঠানের মরহুম মতিয়ার রহমানের জেষ্ঠ্য পুত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান মল্লিক এর সাথে। তিনি জানান, ২০১৪ সালে নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় ৩৩ শতাংশ জমির উপড় এতিম শিশুদের জন্য ‘রানাপাশা মাহমুদিয়া এতিমখানা ও হাফেজি মাদরাসা’র দোতলা ভবন নির্মাণ করেন মরহুম মতিয়ার রহমান মল্লিক। সেই থেকে চলছে সম্পূর্ণ ব্যাক্তি উদ্যোগে কারো কোন সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া নিজ অর্থায়নে প্রতিষ্ঠিত এতিমখানা ও হাফেজি মাদরাসা। ইতমধ্যে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ইন্তেকাল করেন ‘রানাপাশা মাহমুদিয়া এতিমখানা ও হাফেজি মাদরাসা’র প্রতিষ্ঠাতা মতিয়ার রহমান মল্লিক। এর আগে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের ব্যায়ভার বহনের জন্য দান করে গিয়েছেন ১ এরর কৃষি জমি এবং রানাপাশা নতুন হাটে তার নিজস্ব ২০টি দোকানঘর। কিন্তু এ থেকে যা আয় হয়, তা দিয়ে বর্তমানে ৩০ জন এতিম শিশুর ভরণ পোষন, শিক্ষক ও কর্মচারিদের বেতন সহ অন্যান্য খরচ বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই পারিবারিক ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ‘টি সি কনসোর্টিয়াম’ প্রতিষ্ঠানের ব্যায়ভার বহন করা হচ্ছে বলেও জানান প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান মল্লিক।
তিনি আরো জানান, ব্যাবসায়িক কারণে স্বপরিবারে ঢাকাতে থাকলেও প্রতিষ্ঠানটি যাতে ভালোভাবে চলে, এতিম শিশুদের যাতে থাকা খাওয়ায় কষ্ট না হয় তা দেখভাল করতে প্রতিমাসে এরবার বাড়িতে আসেন এবং নিজেই সবকিছু তদারকি করেন। বর্তমানে এতিম শিশুদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ‘রানাপাশা মাহমুদিয়া এতিমখানা ও হাফেজি মাদরাসা’র দোতলা ভবনটির ৩য় তলার কাজ শুরু করেছেন তিনি। যা অল্প কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হবে। প্রতিষ্ঠানটি নিবন্ধনের জন্য জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। নিবন্ধিত হওয়ার পরে সরকারি সহায়তা পেলে আরও ভালভাবে চলবে বলে মনে করেন ‘রানাপাশা মাহমুদিয়া এতিমখানা ও হাফেজি মাদরাসা’র প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মতিয়ার রহমানের জেষ্ঠ্য পুত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান মল্লিক।

Print Friendly, PDF & Email