পাঁচ দফা প্রস্তাবে আমীন আমীন ধ্বনিতে নেছারাবাদের মাহফিল সম্পন্ন

প্রকাশিত: ১০:১২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩ | আপডেট: ১০:১২:অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩

লাখো মুসল্লি, ভক্ত-আশেকের আমীন-আমীন ধ্বনি ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হলÑপ্রখ্যাত বুযর্গ, খ্যাতিমান দার্শনিক ও সমাজ সংস্কারক হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুর রহ. প্রতিষ্ঠিত ঝালকাঠি নেছারাবাদের ঐতিহ্যবাহী বার্ষিক ঈছালে ছওয়াব ওয়াজ মাহফিল। আখেরী মুনাজাত-পূর্ব সমাপনী বয়ানে তিনিÑ‘কাস্রাতে যিকরুল্লাহ ও নেসবতে আহলুল্লাহ’ অর্থাৎ অধিক পরিমাণে যিকির ও আল্লাহ-অলাদের সোহবত গ্রহণের উপদেশ দেন হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুর রহ.-এর যোগ্য উত্তরসূরী আমীরুল মুছলিহীন হযরত মাওলানা মুহম্মদ খলীলুর রহমান নেছারাবাদী । তিনি বলেনÑ‘আল্লাহ-অলাদের সাথে সম্পর্ক জুড়ে থাকার মধ্যেই রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতের সর্বাঙ্গীন কল্যাণ ও মুক্তি।
দল মত-ছেলছেলা নির্বিশেষে দেশের পীর-মাশায়েখ, ওলামায়ে কেরাম, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং ৬৪ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আগত সমাজের প্রতিনিধি পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গসহ সাধারণ ধর্ম প্রাণ মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হওয়া দুইদিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত এ মাহফিলের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিলো আওলিয়ায়ে কেরামের অনুসৃত পথে জাতীয় ও ধর্মীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিপূর্ণ ইসলামী সমাজ নির্মাণে আগত মেহমানদের গড়ে তোলা। ফলে মাহফিলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নামায-কালাম, যেকের-আযকার, তসবীহ-তাহলীল, মাসলা-মাসায়েল ইত্যাদি হাতে-কলমে প্রশিক্ষণসহ ওয়াজ নসীহত সবকিছুতেই ছিলো আগত মানুষের জন্য শিক্ষণীয় এক ব্যতিক্রমী আবহ।
মুনাজাতের পূর্ব-মুহূর্তে বাংলাদেশ হিযবুল্লাহ জমিয়াতুল মুছলিহীনের পক্ষ থেকে দেশ, জাতি ও উম্মাহর কল্যাণার্থে ০৫ দফা প্রস্তাব পেশ করা হলেÑউপস্থিত জনতার স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ও তকবির ধনির মধ্য দিয়ে সমর্থিত হওয়ায়তা এখন জাতীয় দাবি ও কর্তব্য হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।
প্রস্তাবসমূহ এই ০১. জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশে^র সকল মানুষের নিকট যার যতটুকু সম্বল আছে তাই নিয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত তুরস্ক ও সিরিয়ার অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো; ০২. হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুর রহ. প্রবর্তিত ‘ইত্তেহাদ মায়াল ইখতেলাফ’ তথা ‘মতানৈক্যসহ ঐক্য’ নীতির ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী চরম সঙ্কটে নিপতিত মুসলিম উম্মাহর ঐক্যবদ্ধ হওয়া; ০৩. জাতীয় অধঃপতন ঠেকাতে সর্বপ্রকার বেপর্দেগী-বেলেল্লাপনা ও অশ্লীলতা প্রতিরোধে দেশের সকল রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক দল ও সচেতন নাগরিক সমাজের এগিয়ে আসা; ০৪. নাস্তিক্য বাদের প্রচার ও প্রতিষ্ঠা প্রতীয়মান হওয়ায় ২০২৩-এর জন্য নির্ধারিত সমুদয় পাঠ্যপুস্তক প্রত্যাহার ও গণসচেতনতা সৃষ্টি; ০৫. সামাজিক দুর্দশাও জনক্ষোভ লাঘবে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর ও বাস্তব-সম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ। এসব প্রস্তাবগৃহীত হবার পর হযরত নেছারাবাদী হুজুর সকলকে মুবারকবাদ জ্ঞাপন করে আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন।

Print Friendly, PDF & Email