রাজাপুরের সোহাগ ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর মুখে ফরিদা

প্রকাশিত: ৩:০০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০২১ | আপডেট: ৩:০০:অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০২১

রাজাপুর উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের ইদ্রিস মোল্লার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪০) গত বছরের ১০ নভেম্বর রাজাপুর সোহাগ ক্লিনিকে জরায়ুর সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন। ফরিদা বেগমের এইচবিএসএজি পজিটিভ থাকার পরেও ১১নভেম্বর ওই ক্লিনিকে জরায়ু অপারেশ করেন ডা. নাসরিন সুলতানা। অপারেশনের ৫দিন পরে তাকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ছাড়পত্র দেন। কিন্তু এরপর থেকে রোগীর সুস্থতার পরিবর্তে আরো দিন দিন অবনতির দিকে ধাবিত হতে থাকে অপারেশনের স্থানসহ শারিরীক অবস্থার। পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসক ( প্রসুতি ও স্ত্রী রোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক) ডা. শাহ আলম তালুকদারকে দেখালে চিকিৎসা ব্যবস্থায় ভুল ধরা পড়ে। ক্লিনিক মালিক আহসাান হাবিব সোহাগ’র কাছে বিষয়টি জানালে তিনি নিজ খরচে উন্নত চিকিৎসা করানোর প্রতিশ্রæতি দিয়ে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। ৩ মাস অতিবাহিত হলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে ক্লিনিক মালিক সোহাগ’র কাছে গিয়ে পুনরায় চিকিৎসা সহায়তার আবেদন জানান ফরিদা বেগমের স্বামী ইদ্রিছ মোল্লা। তখন সোহাগ ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফিস্টুলা সেন্টার/বিবিএফ যাবার পরে ফোন দিতে বলেন। উক্ত চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের কথা উল্লেখ করলে চিকিৎসার টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে থানায় গিয়ে পারলে মামলা করতে বলে ধৃষ্টতা দেখান আহসান হাবিব সোহাগ। জরায়ু টিউমার অপারেশন করাতে গিয়ে চিকিৎসকের অদক্ষতায় এখন মৃত্যু পথযাত্রী ফরিদা বেগম। উপায়হীন হয়ে ফরিদা বেগমের স্বামী ইদ্রিস মোল্লা ঝালকাঠি সিভিল সার্জন বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করেন, রাজাপুর সোহাগ ক্লিনিকে ফরিদা বেগমের জরায়ু টিউমার অপারেশন করানো হলে চিকিৎসক নাসরিন সুলতানা ভুল চিকিৎসা করেন। ৩মাস অতিবাহিত হলে পুনরায় ঢাকা মেডিকেল কলেজে উন্নত চিকিৎসা করানোর দায়ভার নেন সোহাগ ক্লিনিকের মালিক আহসান হাবিব সোহাগ। ৩মাস পরে জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আহসান হাবিব সোহাগ’র সাথে আলোচনায় বসা হয়। তখন সোহাগ ঢাকা মেডিকেল কলেজ ফিস্টুলা সেন্টার/বিবিএফ যাবার পরে ফোন দিতে বলেন। উক্ত চিকিৎসার ব্যয়ভার বহনের কথা উল্লেখ করলে চিকিৎসার টাকা দিতে অপারগতা স্বীকার করে পারলে থানায় গিয়ে মামলা করতে বলে।
ইদ্রিস মোল্লা জানান, আমি অশিক্ষিত মানুষ। ডাক্তার যেভাবে ভালো বুঝেছেন সেভাবেই অপারেশ করেছেন। আমার স্ত্রীর এইচবিএসএজি পজিটিভ থাকার পরেও ডা. অপারেশন করেছেন। একারণে তার অপারেশন স্থলে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসক ( প্রসুতি ও স্ত্রী রোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক) ডা. শাহ আলম তালুকদারকে দেখালে চিকিৎসা ব্যবস্থায় ভুল ধরা পড়ে। তখন বুঝতে পারি ডাক্তার অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। বর্তমানে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে চিকিৎসাধীন আছেন। এখন যে কোন সময়ে দুর্ঘনা ঘটতে পারে। সিভির সার্জনের কাছে দেয়া অভিযোগের যথাযথ বিচার দাবিও করেন তিনি।
এব্যাপারে সোহাগ ক্লিনিকের মালিক আহসান হাবিব সোহাগ জানান, রোগী ভর্তি করানোর পরে অপারশেন সফলভাবেই সম্পন্ন হয়েছে। ৩মাস পরে অপারেশন স্থলে সমস্যা কথা নিয়ে এলে তাদের উন্নত চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এখন তারা আমার উপরে সম্পুর্ণ দায়ভার চাপাতে চেষ্টা করছেন।

Print Friendly, PDF & Email