
তপেজ খাঁ,
মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরের কালকিনিতে যৌতুকের দাবিতে ঘরে আটকে রেখে ফারাজানা আক্তার(২০) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধুকে ভয়াবহ নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।গৃহবধূকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদিকে স্বামী পক্ষ প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা করতে সাহস পাচ্ছেনা ওই অসহায় নির্যাতিত গৃহবধুর পরিবার।
শুক্রবার সন্ধায় এলাকা ও ভুক্তভোগী পরিবারের সুত্রে জানা যায়, উপজেলার শিকারমঙ্গল এলাকার মৃধাকান্দি গ্রামের হারেজ মৃধার মেয়ে ফারজানা আক্তারের সঙ্গে পুর্ব এনায়েতনগর এলাকার সোবহান সরদারের ছেলে আরিফ সরদারের পারিবারিকভাবে প্রায় তিন বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় স্বর্নলঙ্কারসহ বিভিন্ন আসবাপত্র দেয়া হয়। বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা ফারজানার দেড় বছর বয়সের একটি কন্য সন্তান রয়েছে। তাদের বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই আরিফ সরদার ও তার পরিবারের লোকজন মিলে বিভিন্ন সময় কারনে-অকারনে ফারজানাকে শারীরিক ও মানষিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছে। আরিফ সরদার তার বাড়িতে একটি পাকা বাড়ির নির্মান কাজ শুরু করেন। এ বাড়ি পূর্ননির্মানের জন্য যৌতুকলোভী আরিফ সরদার ফারজানার পরিবারের কাছে যৌতুক হিসেবে ১ লাখ টাকা দাবি করে। ফারজানার পরিবার গরীব হওয়ায় এ যৌতুকের টাকা দিতে ব্যর্থ হন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সম্প্রতি আরিফ সরদার ও তার পরিবারের লোকজন মিলে ফারজানাকে নিজ ঘরের ভেতর আটকে রেখে প্রথমে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে এবং তার গোপনাঙ্গে রড দিয়ে খুচিয়ে-খুচিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে ফেলে রাখে। এতে করে প্রচন্ড রক্তক্ষরন হয়ে অন্তঃসত্ত্বা ফারজানা অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে পূনরায় শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা চালায় পাষান্ড স্বামী আরিফ। পরে স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে ফারজানাকে উদ্ধার করে প্রথমে কালকিনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পরে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকের কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এদিকে নির্যাতনকারী আরিফ এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় ফারজানার অসহায় পরিবার এ ঘটনায় মামলা করতে সাহস পাচ্ছেনা বলে জানা যায়।
আহত ফারজানা কান্না জরিত কন্ঠে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, আমার পরিবার গরীব হওয়ায় আরিফের অনেক অন্যায়-অত্যাচার সব মুখবুঝে সহ্য করেছি। আমাকে শেষ করে দিয়েছে আরিফ ও তার পরিবারের লোকজন। আমি তার দৃষ্টান্ত মুলক বিচার চাই।
আহত ফারজানার বাবা হারেজ মৃধা বলেন, আমি যৌতুকের টাকা পরিষদ করতে না পারায় আমার মেয়েকে কঠিনভাবে নির্যাতন করেছে আরিফ সরদার ও তার পরিবারের সদস্যরা। আমার মেয়ের অবস্থা শারীরিকভাবে খুবই খারাপ। আমরা আরিফের ভয়ে মামলা করতে সাহস পাচ্ছিনা।
এ বিষয় জানতে চাইলে অভিযুক্ত আরিফের বাবা সোবহান সরদার বলেন, ফারজানাকে মারধর করার পরে আমরা তাকে চিকিৎসা করিয়েছি। আর মারলে কি হয়েছে।
এ ব্যাপারে কালকিনি থানার ওসি মোঃ নাছিরউদ্দিন মৃধা বলেন, নির্যাতিত পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জিএম/হক