কাঠালিয়ায় বিষখালী নদীর মধ্যে জেগে ওঠা চরকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা
মোঃ শাহাদাত হোসেন মনু মোঃ শাহাদাত হোসেন মনু
সিনিয়র সাংবাদিক

ঝালকাঠির সুগন্ধা-গাবখান ও বিষখালী নদীর মোহনা থেকে বিষখালি নদীর উৎপত্তি হয়ে দক্ষিনে দৈর্ঘতম ২০৫ কিলোমিটার জুড়ে এঁকেবেঁকে বয়ে গেছে বিষখালী নদী। যা গিয়ে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে। ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার শৌলজালিয়া ও বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার মাঝখানে বিষখালী নদীতে জেগে উঠেছে বিশাল চড়। সেই চরকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করে সেখানে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার সকালে কাঁঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদার এ ঘোষণা করেন।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, কাঁঠালিয়ার দক্ষিণ শৌলজালিয়া মৌজার ১০৩ দশমিক ৩ একর জমি পাখির অভয়ারণ্যের আওতায় থাকবে। সেখানে পাখি শিকার, মাটি কাটা, গাছ কাটা, বালু উত্তোলন ও গরু-মহিষ চরানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সেখানে প্রকৃতিকে সবুজ ও সুন্দর রাখতে ‘এসো পাখির বন্ধু হই ’ ¯েøাগান সংবলিত সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। পাখির বাসার জন্য বিভিন্ন গাছে ঝোলানো হয়েছে হাঁড়ি। উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চরটি দেখভাল করবে। এ চরে থাকে টুনটুনি, বক, ময়না, টিয়া, ঘুঘু, পেঁচা, বুলবুলি, কাক, শালিক, বাবুই, ডাহুক, বৈরী, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, বউ কথা কও, দোয়েল, কোকিল, কাঠঠোকরানি, চিল, হরিয়ালসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।
পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন, শৌলজালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মো. মনেয়ার হোসেন, হক্কোননুর দরবার শরিফের প্রতিনিধি মো. মঞ্জিল মোর্শেদ, ইউপি সদস্য মো. সামছুল আলম, স্থানীয় বাসিন্দা মো. খবির উদ্দিন খান, মো. ছালাম গাজী প্রমুখ।
ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন জানান, বিষখালি নদীর শৌলজালিয়া-বেতাগীর মাঝখানে চড় প্রশাসনিক ভাবে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণার প্রেক্ষিতে আজকে কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুফল চন্দ্র গোলদারের উপস্থিতিতে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। মহিষ, গরু, ছাগল পালন করে ঘাস খাওয়ানো বা অন্য কেন উদ্দেশ্যে উক্ত চরে চড়াবেন না। মাটি, বালু, গাছ কেউ কাটিবেন না। চরের চারিপাশে কেহ মাছ ধরার ফাঁদ হিসাবে ঝাউ বা গাছের ডাল ফেলবেন না। উভয়ই আইনত অপরাধ বলে গন্য হবে। এ চর আপনার আমার সকলের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকরে।
শৌলজালিয়া ইউনিয়নবাসীর পক্ষ থেকে এ চরকে “শেখ রাসেল ইকোপার্ক” নাম করণ করে আরো সমৃদ্ধশালী করার দাবী জানান চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন রিপন।
ইউএনও সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, বিষখালী নদীর বুকে জেগে ওঠা ৩০ বছর আগের এ নৈসর্গিক চরকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়েছে। এতে পাখির বংশ বৃদ্ধি পেয়ে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা হবে।