ঝালকাঠি জেলা কারাগারে বন্ধী ও কারা রক্ষিদের করোনা ভাইরাসের ছোবল থেকে মুক্ত রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। চেকআপ ও নিবীড় পর্যবেক্ষণে রয়েছে বন্ধী ও কারা রক্ষিরা। তাছাড়াও স্বজনদের সাক্ষাতের সময় ও নিকটাত্মীয় ছাড়া সাধারন যে কাউকে সাক্ষাতের বিষয়টিও কড়াকড়ি করা হয়েছে।
কারাসূত্র জানায়, সাক্ষাতের নির্ধারিত স্থানটির ১ মিটার দূরত্বে নেট লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। যাতে একে অপরের সাথে কথা বলার সময় হাঁচি, কাশি দিলে অন্যজন সংক্রামনের আশংকা না থাকে। কারা কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ বন্দিদের কারা অভ্যন্তরে প্রবেশের সময় জুতা জীবাণুমুক্ত করার জন্য মেইন গেইটে একটি বিশেষ ট্রে রাখা হয়েছে। যার ভিতর পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্রবণ (লিকুইড) ঢেলে রাখা হয়েছে। তাতে জুতা ভিজিয়ে জীবানু মুক্ত করে সকলকে কারা অভ্যন্তরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। প্রতিদিন দু’বার করে বন্ধী ও কারারক্ষিদের শরীরের তাপমাত্রা পরিমাপ করছেন স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত ফার্মাসিস্ট সুপ্রকাশ ব্যাপারী। বন্দিদের বার বার হাত ধোয়ার জন্য একাধিক পয়েন্টে সাবান ও পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ভিতরে ২টি কোয়ারেন্টাইন ওয়ার্ড চালু করা হয়েছে। বাহির থেকে নতুন আসামী প্রবেশের সাথে সাথে তাদেরকে কোয়ারেন্টাইন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। সেখানে ১৪ দিন থাকার পর সাধারণ ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। এই ১৪ দিনর আগে যদি কোন বন্ধীর জামিন হয় তাহলে কারো সংস্পর্শে না নিয়ে বাহিরে পাঠিয়ে দেয়া হয়। করোনা ভাইরাসটি কিভাবে ছড়ায় এবং তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা ও করণীয় সম্পর্কিত বিশেষ নির্দেশনা সম্বলিত পোস্টার কারা অভ্যন্তরে এবং বাহিরের আরপি গেইটে (প্রধান ফটক) সাঁটানো রয়েছে। টেইলারিং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কারা বন্দিদের দিয়ে ভালো মানের মাক্স তৈরি করে সকল বন্ধিদের মাঝে সরবরাহ করা হয়েছে। তবে বিশেষ ভাবে তৈরি করা এই মাক্স নিতে বন্দিদেরকে খরচ বাবদ পিসি বইয়ের মাধ্যমে ২৫ টাকা মুল্য পরিশোধ করতে হয়েছে।
ঝালকাঠি জেল সুপার শফিউল আলম জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক নির্দেশনা এবং সরকারের আদেশ মোতাবেক বন্দিদের সুরক্ষায় সার্বিক ব্যবস্থা ও নজরদারী আমরা করছি। দেখার ঘরে গেদারিং কমানোর লক্ষ্যে বন্দিদের সাথে স্বজনদের সাক্ষাতের সময় কমিয়ে প্রতি ১৫ দিনে ১বার করা হয়েছে। সেই সাথে বেশিক্ষণ কথা না বলার জন্যও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।