ঝালকাঠি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডারসহ ৫ মুক্তিযোদ্ধার নাম রাজাকারের তালিকায়, বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন
মোঃ শাহাদাত হোসেন মনু মোঃ শাহাদাত হোসেন মনু
সিনিয়র সাংবাদিক

ঝালকাঠি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সৈয়দ শামসুল আলম এবং রাজাপুর মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য এনায়েত হোসেন খান মিলুসহ পাঁচজন মুক্তিযোদ্ধার নাম রাজাকারের তালিকায় থাকার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজাপুর প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে মুক্তিযোদ্ধা ও সন্তান কমান্ড ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। পরে অনুষ্ঠিত হয় সমাবেশ। এতে বক্তব্য রাখেন ঝালকাঠি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার দুলাল সাহা, খন্দকার শফিউল আলম, নূরুল ইসলাম খলিফা, রাজাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এনায়েত হোসেন খান মিলু ও ইউনিয়ন কমান্ডার আলতাফ হোসেন।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করেন, রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম থাকার লজ্জা জাতি কখনো ভুলতে পারবে না। এ ধরনের ভুল ও ত্র“টিপূর্ণ তালিকার প্রকাশের জন্য মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হোসেনকে দায়ী করে, তাঁর পদত্যাগ দাবি করেন মুক্তিযোদ্ধারা। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সোহাগ হাওলাদারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেন মুক্তিযোদ্ধারা।
ঝালকাঠির মুক্তিযোদ্ধারা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা রাজাকারের তালিকায় ৫ মুক্তিযোদ্ধার নাম দেখে ক্ষুদ্ধ হন। তালিকায় ১৪২ নম্বর ক্রমিকের ১ নম্বরে নাম রয়েছে প্রায়াত মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক মৃধা, ২ নম্বরে রয়েছেন মতিউর রহমান, ৩ নম্বরে রয়েছেন দবির উদ্দিন খান, ৪ নম্বরে রয়েছে সৈয়দ শামসুল আলম, ৫নম্বরে আছেন এনায়েত হোসেন খান মিলু’র নাম। তাঁরা সবাই রাজাপুরের মুক্তিযোদ্ধা।
এদের মধ্যে সৈয়দ মামসুল আলম ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার। তিনি ২০১২ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। এছাড়াও রাজাপুরের এনায়েত হোসেন খান মিলু ছিলেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এবং বর্তমান যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য। মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত রাজাকারদের তালিকা ত্র“টিপূর্ণ ও অগ্রহনযোগ্য বলে ওই তালিকা প্রত্যাহার এবং সংশোধনের দাবী জানান মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা। ঝালকাঠি মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার দুলাল সাহা বলেন, এ তালিকা গ্রহনযোগ্য নয়। অবিলম্বে প্রকৃত রাজাকারদের নামসহ নির্ভুল তালিকা প্রকাশ করতে হবে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়কে। তা না হলে মুক্তিযোদ্ধারা কঠোর কর্মসূচী দিতে বাধ্য হবে।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে রাজাকারদের প্রকাশিত তালিকায় ঝালকাঠি জেলার ১৯১ জনের নাম রয়েছে। এদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারসহ ৫ মুক্তিযোদ্ধার নাম রয়েছে।