আমি চাঁদা দিয়েছি এ’টা পারলে ও প্র’মাণ ক*রুক: জাবি ভিসি

নাজমুল হক নাজমুল হক

ব্যাবস্থাপনা সম্পাদক

প্রকাশিত: ২:২৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯ | আপডেট: ২:৪৭:অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৯

ঈ’দ  সালামি হিসেবে বি’শ্ববিদ্যালয়  প্রশাসন ছাত্রলীগকে ১ কোটি টাকা দিয়েছে বলে জাহাঙ্গীরনগর বি’শ্ববিদ্যালয়  (জাবি) ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন যে দাবি করেছেন, সেটি প্রত্যাখ্যান করেছেন উ’’পাচার্য  অধ্যাপক ফার*জানা  ইসলাম। তিনি বলেছেন, সাদ্দাম মিথ্যা বলছেন, তিনি এই মিথ্যা বলা বন্ধ না করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

জাবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদকের দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উ’’পাচার্য  অধ্যাপক ড. ফার*জানা  ইসলাম বি’শ্ববিদ্যালয়  ছাত্রলীগকে ঈ’দ  সালামি বাবদ ১ কোটি টাকা দিয়েছেন। এর মধ্যে জাবি ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল রানা নিয়েছেন ৫০ লাখ টাকা, সাধারণ সম্পাদক এসএম আবু সুফিয়ান চঞ্চল নিয়েছেন ২৫ লাখ টাকা আর তিনি (সাদ্দাম) নিয়েছেন ২৫ লাখ টাকা।

 

এর আগে চাঁদাবাজির অভিযোগে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অপসারিত হওয়া গোলাম রাব্বানী অভিযোগ করেন, জাবির উন্নয়ন প্রকল্পে বাধা হয়ে না দাঁড়ানোর জন্য বি’শ্ববিদ্যালয়  শাখা ছাত্রলীগকে ভিসি ফার*জানা  ইসলাম ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা দিয়েছেন। অন্যদিকে উ’’পাচার্য  অভিযোগ করেন, তিনি কোনো টাকা দেননি। বরং রাব্বানী ও ছাত্রলীগের বরখাস্ত হওয়া সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন তার কাছে কয়েক দফায় উন্নয়ন প্রকল্পের বাজেট থেকে ৪ থেকে ৬ শতাংশ টাকা ঈ’দ  সালামি দাবি করেন।

 

এ বিষয়ে জাবি শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, উ’’পাচার্য  ম্যাম আমাদের এক কোটি টাকা দিয়েছেন ঈ’দ  সালামি বাবদ। সভাপতি জুয়েল ভাই ৫০ লাখ, সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল ভাই ২৫ লাখ, আর আমি নিছি ২৫ লাখ। কে কয় টাকা নেব এটাও ভিসি ম্যাডাম ঠিক করে দিছেন।

 

ঈ’দ  সালামি হিসেবে ছাত্রলীগ এক কোটি টাকা কেন নেবে এমন প্রশ্নের জবাবে সাদ্দাম বলেন, ‘ভাই, আমাকে দিছে। ঈ’দ  সালামি বলে আমি নিছি। আমার পোলাপান আছে। রাজনীতি করি টাকার দরকার আছে। কেউ যদি ঈ’দ  সালামি দেয় আপনি নেবেন না? ভিসি কোথা থেকে এত টাকা সালামি দিয়েছেন এমন প্রশ্নে সাদ্দাম বলেন, কোথায় থেকে এই টাকা ম্যাম আমাদের দিয়েছেন, তা আমরা জানি না। এক কোটি টাকা ঈ’দ  সালামি পেয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছি আমরা।

 

সাদ্দামের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন ভিসি ফার*জানা  ইসলাম। তিনি বলেন, আমি শুরু থেকে বলে আসছি, আমি কাউকে চাঁদা দেইনি। তবে কেউ যদি বলে টাকা পেয়েছে, তাহলে পেতে পারে। আমি দিইনি। আমি টাকা দিয়েছি এটা পারলে ও (সাদ্দাম) প্রমাণ করুক। যেখান থেকে ও পেয়েছে, এটাও বলুক, ওকে বলতে দেন।

 

বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে জানানো হয়েছে দাবি করে ফার*জানা  ইসলাম বলেন, আমি এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছি। তাকে (শিক্ষামন্ত্রী) বলেছি আপনারা চাইলে তদন্ত করেন। কিন্তু ওনি বলেছেন, এসব মিথ্যা। ভুয়া বিষয়ে আমরা তদন্ত করতে চাই না। যেগুলোর কোনো দালিলিক অভিযোগ নাই, সেখানে কেন তদন্ত করব শুধু শুধু। ওনারা চাইলে তদন্ত করতে পারেন-যোগ করেন ভিসি।

ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দামকে হুশিয়ার করে উ’’পাচার্য  বলেন, ‘সাদ্দামকে কাল (মঙ্গলবার) সতর্ক করা হবে। তার পরও যদি সে সতর্ক না হয়, মিথ্যা গুজব ছড়ায় তা হলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

 

প্রসঙ্গত ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও জাহাঙ্গীরনগর বি’শ্ববিদ্যালয়  শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের ফাঁস হওয়া ফোনালাপ থেকে জানা যায়, আলোচিত এক কোটি টাকা জাবি শাখা ছাত্রলীগকে ঈ’দ  সালামি হিসেবে দিয়েছেন উ’’পাচার্য  ফার*জানা  ইসলাম।

 

চাঁদবাজিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে পদ হারিয়েছেন ছাত্রলীগের সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক রাব্বানী। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চাঁদাবাজির বিষয়টি মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে ওই দুজনকে সরিয়ে দেন।

সূত্র: যুগান্তর

 

Print Friendly, PDF & Email