
মাদারীপুরে বহুল আলোচিত ব্যবসায়ী সোহেল হত্যার প্রধান আসামি বাজিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন মাদারীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইদুর রহমান। বুধবার দুপুরে মামলার শুনানি শেষে বিজ্ঞ আদালত ৩ দিনের রিমান্ডের আদেশ প্রদান করেন।
মামলার বিবরণ ও রাজৈর কোর্টের জিআরও সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বাজিতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের সাথে দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার আবদুল খালেক হাওলাদারের ছেলে সোহেল হাওলাদারের বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম ও তার বাহিনী গত ৯ মে রাজৈরের মজুমদার বাজারের ব্রিজের কাছে সোহেল হাওলাদারকে একা পেয়ে কুপিয়ে মারাত্মক ভাবে জখম করে। সোহেলকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তৃব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ হত্যা কান্ডের ঘটনায় সোহেলের ভাই বাবু হাওলাদার বাদী হয়ে রাজৈর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলা প্রধান আসামী ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বেশ কিছুদিন এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায়। পরে উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জন্য জামিন নিয়ে এলাকায় আসেন। উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হলে তিনি সোমবার (২৬ আগস্ট) মাদারীপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাজির আহমেদ-এর আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। আদালতের বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। বুধবার রাজৈর আদালতের বিচারক মাদারীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইদুর রহমান-এর আদালতে রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার পক্ষে রাজৈর আদালতের পরিদর্শক মো. ফরিদ আহমেদ ৫দিনে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলাটি বর্তমানে সিআইডিতে তদন্তাধীন থাকায় সিআইডি অফিসে চেয়ারম্যানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
রাজৈর আদালতের পরিদর্শক মো. ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘মামলাটি বর্তমানে সিআইডিতে তদন্তাধীন থাকায় সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তার পক্ষে আমি বিজ্ঞ আদালতে ৫দিনে রিমান্ডের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’
এদিকে সোমবার প্রধান আসামির সঠিক বিচারের দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে এলাকাবাসী। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করে নিহত সোহেলের পরিবার। এ হত্যার প্রতিবাদে এলাকাবাসী বেশ কয়েকবার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে এলাকাবাসী।