প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় কুয়েত প্রবাসী মেয়ের আত্মহত্যা

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

জি এম নিউজ জি এম নিউজ

বাংলার প্রতিচ্ছবি

প্রকাশিত: ১০:৪৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০১৯ | আপডেট: ১০:৪৭:অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০১৯

প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় মারিয়া আফরোজ সুইটি (১৫) নামের নবম শ্রেণির এক ছাত্রী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে বাড়ির পাশে তাকে দাফন করা হয়।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত মারিয়া আফরোজ সুইটি ভালুকা উপজেলার ইউনিয়নের পুরুড়া গ্রামের তেতুলীয়া পাড়ার কুয়েত প্রবাসী মোতাহার হোসেন সবুজের কিশোরী মেয়ে এবং ভালুকার ভরাডোবা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। দেড় বছর ধরে একই গ্রামের তাজুল ইসলামের ছেলের কলেজ পড়ূয়া কবির আহমেদের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সুইটির বাবা-মা তার মেয়ের এই প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেয়নি।

পরে ছেলে পক্ষ বিয়ের জন্য মেয়ের বাবার বাড়িতে লোক পাঠালে ছেলে গরীব বলে বিয়ে দেবে না জানিয়ে দেওয়া হয়। এ নিয়ে গত এক বছরে দুই পরিবারের মাঝে বেশ কয়েকদফা আলোচনাও হয়। কিন্তু মেয়ে পক্ষ ঘটনাটি কোনোভাবেই মেনে না নেওয়ায় গত বুধবার সুইটি ফেসবুকে একটি স্ট্যাটান দেয়।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে সুইটি লেখে, ‘ আমাকে বুঝার তোমরা কোনোদিন ট্রাই করোনি। যেদিন আমি তোমাদের ছেড়ে চলে যাব অচিনপুর। তখন তোমরা বুঝবা আমি কি ছিলাম। তোমাদের জন্য তখন চাইলেও কেউ আমাকে ফিরে পাবে না, বাই!’

এরপর গত বৃহস্পাতবার সকালে সুইটি স্কুলে আসে এবং দুপুরের বিরতির সময় তিনি ভালুকা বাজারের গিয়ে ইঁদুর মারার বিষ কিনে খেয়ে বাসে চড়ে বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু বাস থেকে ভরাডোবা বাসস্ট্যান্ড নামার পর সে অচেতন হয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাকে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনার রাতেই সে হাসপাতালে মারা যায়।

নিহত সুইটির চাচা আজিজুল হক সুজন জানান, এক বছর ধরে একই গ্রামের কবির নামে কলেজ পড়ূয়া এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ওই সম্পর্ক ভেঙে গেছে।

ভালুকা উপজেলার ধলিয়া ইউনিয়নের স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র ও সুইটির প্রেমিক কবির আহমেদ সুইটির সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কের কথা স্বীকার করে বলেন, আমরা গরীব বলে আমার কাছে সুইটির পরিবার বিয়ে দেবে না বলে জানায়। তাই সুইটির সঙ্গে অনেকদিন ধরে আমার যোগাযোগ নেই।

ভালুকা ভরাডোবা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুর হক জানান, ঘটনাটি আমরা পরে শুনেছি।

ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন জানান, স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যার পর ময়নাতদন্ত শেষে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email