
কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপির প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে পুলিশ! আর এমনটাই মনে করছে কক্সবাজার জেলা বিএনপি।
বৃহস্পতিবার ‘কোন ঘটনা ছাড়াই’ রাস্তায় যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি ও যানবাহনে আগুন দেয়ার অভিযোগ তুলে বিএনপি ও জামায়াত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করার ঘটনায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপি সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী সাংবাদিকদের কাছে এমনই মতামত ব্যক্ত করেছেন।
আগামি ২৫ জুলাই অনুষ্টিতব্য কক্সবাজার পৌরসভা নির্বাচনে পুলিশের ভূমিকা ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ ও তারা নিরপেক্ষতা হারিয়েছে দাবি করে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, পৌরসভা নির্বাচনে সুষ্টু নির্বাচন ও আইন শৃংখলা রক্ষার স্বার্থে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে।
এই সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ‘ধানের শীষ’ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান প্যানেল মেয়র রফিকুল ইসলাম।
মেয়র প্রার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে ও নির্বাচনী আচরণবিধির মধ্যে থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। অথচ সরকারি দলের প্রার্থীর লোকজন আমাদের প্রচার-প্রচারণায় বাধার সৃষ্টি করছেন।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, শহরের পেশকার পাড়ায় তাঁর নির্বাচনী গাড়ির মাইক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শহরের হলিডে মোড়ে তাঁর নির্বাচনী ব্যানার নামিয়ে ফেলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ লুৎফুর রহমান কাজল সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন ধরণের ঘটনা ছাড়াই নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে পুলিশ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, পুলিশের মামলাটিতে যে ৪২ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে তা দিয়ে নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হবে। ধানের শীষের প্রার্থী যাতে নির্বাচনী পোলিং এজেন্ট দিতে না পারে তার জন্যই প্রভাবশালীরা পরিকল্পিত ভাবে এই মামলা করিয়েছে।
তিনি মামলাটি আইনগত ভাবে মোকাবেলা করা হবে বলেও জানান।
কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশ ১৭ জুলাই ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে শহরের খুরুস্কুলের ব্রীজের দক্ষিণে তিন রাস্তার মোড় পাকা রাস্তা থেকে দুই কিলোমিটার পূর্বে রাস্তায় যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তুলে জামায়াত নেতা ও কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শহীদুল আলম বাহাদুর ও জেলা ছাত্রদল সভাপতি রাশেদুল হক রাসেলসহ বিএনপি-জামায়াতের ৫৭ জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা রুজু করে।
বিএনপি দাবি করেছে, ওই মামলায় ১৫ জনকে এজাহারনামীয় আসামিসহ যে ৫৭ জনকে আসামি করা হয়েছে তাদের মধ্যে বিএনপির ৪ জন ও জামায়াতের ৩ জন রয়েছেন। অন্যরা কারা বিএনপি নেতা-কর্মীরা চেনেন না।
আরেক প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিএনপির প্রার্থীর ১১ নাম্বার ওয়ার্ড থেকে ইভিএম পদ্ধতি এখনও তিনটি কেন্দ্রেই রাখা হয়েছে। বরং ১১নং ওয়ার্ডেরই একটি কেন্দ্র (মহিলা কামিল মাদ্রাসা) সরিয়ে কক্সবাজার কেজি স্কুলে নিয়ে আসা হয়েছে।বিএনপির দাবি, কক্সবাজার কেজি স্কুল কেন্দ্রটি মূলতঃ আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ‘উঠান’ হিসেবেই পরিচিত। বরং বাহারছড়ার ভোটারদের কেন্দ্রটি এখন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ‘উঠানে’ নিয়ে আসা হয়েছে।
জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরীর সঞ্চালনায় অনুষ্টিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, কক্সবাজার পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মোঃ আলী, জেলা বিএনপির যুগ্ন-সম্পাদক আখতারুল আলম, স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি অধ্যাপক আজিজুর রহমান, জেলা বিএনপি সদস্য এড. আবু ছিদ্দিক ওসমানী, সহ-দপ্তর সম্পাদক এড. হাসান সিদ্দিকী, রামু উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি সাইফুল আলম চেয়ারম্যান, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জিসান উদ্দিন জিসান, সাংগঠনিক সম্পাদক আমীর আলী প্রমুখ।