শোকে স্তব্ধ নরসিংদীর রবিনের পরিবার
সৌদী আরবের রিয়াদে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ
জি এম নিউজ জি এম নিউজ
বাংলার প্রতিচ্ছবি

সৌদী আরবের রিয়াদে শুক্রবার গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে নিহত নরসিংদীর মাধবদীর রবিনের পরিবার এখন শোকে স্তব্ধ। রবিন মাধবদী থানার কাঠালিয়া ইউনিয়নের আবুল হোসেনের ছেলে।
৬ লাখ টাকা ধারদেনা করে বিদেশে পাড়ি জমানো রবিনের স্বপ্ন ছিলো ঋণ পরিশোধ করে সংসারের অভাব দূর করা। একদিকে ছেলে হারানো অন্যদিকে ঋণ পরিশোধের চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
আজ শনিবার সরেজমিন সেখানে গেলে নিহতের পরিবার ও স্বজনদেও সঙ্গে কথা জানা গেছে, বাবা মা ও তিন ভাই ও এক বোনকে নিয়ে রবিনের পরিবার। পরিবারটি বড় হওয়ায় অনেকটা টানাপোড়নের মধ্যে চলতে হত তাদের। পরিবারের অভাব দূর করতে তিন মাস আগে এনজিওসহ বিভিন্ন জনের নিকট থেকে ৬ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে রিয়াদে পাড়ি জমিয়ে ছিলেন রবিন। সেখানে যাওয়ার আড়াই মাস পর গত ১৫ দিন আগে কাজে যোগ দিয়েছিলেন রবিন।
দুইদিন আগে সর্বশেষ মা রিনা বেগমের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলেন তিনি। এ সময় সেখানে কাজ পাওয়ায় বিলম্ব ও থাকা খাওয়ার কষ্টের কথা জানিয়েছিলেন মাকে। কষ্টের পরও কাজ পাওয়ায় খুশি হয়েছিলো সে। বেতন পাওয়া শুরু করে ঋণের ৬ লাখ টাকা পরিশোধের পর সংসারের অভাব দূর করে দেবে বলে মাকে আশ্বস্থ করেছিল রবিন।
শুক্রবার বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টায় রিয়াদের একটি ভবনে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আরো ৫ বাংলাদেশিসহ রবিনের মারা যাওয়ার খবর পান পরিবার। এরপর থেকে বিলাপ করতে করতে এখন শোকে স্তব্ধ হয়ে আছেন পরিবারের সদস্যরা।
নিহত রবিনের বাবা আবুল হোসেন বলেন, ছেলেটা আমাদের সুখি করতে গিয়ে চিরদু:খী করে দিলো। অভাবের সংসারে ঋণের বোঝা কিভাবে বইবো, ছেলের শোক কিভাবে সইবো?
মা রিনা বেগম বলেন, দুইদিন আগেও ছেলের সঙ্গে কথা বলে কষ্টের বিবরণ শুনেছি। এরপরও চিন্তা ভাবনা না করতে আশ্বস্থ করেছিল, বলেছিল সব সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
রবিনের দাদা জাহাঙ্গীর হোসেন দ্রুত রবিনের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন, অভাবগ্রস্ত পরিবারটির প্রতিও সদয় হওয়ার অনুরোধ জানান।