রঙ্গশ্রী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক এবং পরিদর্শিকার খুঁটির জোর কোথায়?

জি এম নিউজ জি এম নিউজ

বাংলার প্রতিচ্ছবি

প্রকাশিত: ৮:৩৯ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০১৮ | আপডেট: ৮:৩৯:অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৯, ২০১৮

বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি॥
বাকেরগঞ্জের রঙ্গশ্রী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আনসার উদ্দিন শুভ এবং পরিদর্শিকা সামসুন্নাহার বেগমের খুঁটির জোড় নিয়ে এলাকাবাসী তীব্র ক্ষোভে ফুসে উঠেছে। অতিশিঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে স্বাস্থ্যকেন্দ্র তালাবদ্ধ করবে বলে হুশিয়ারী দিয়েছে এলাকাবাসী। ওই উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আনসার উদ্দিন শুভ এবং পরিদর্শিকা সামসুন্নাহার বেগমের স্বেচ্ছাচারিতা, দায়িত্বে অবহেলা, দূর্ণীতি ও অনিয়ম নিয়ে স্থানীয় বেশ কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে না নেয়ায় জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

 

অভিযোগ রয়েছে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আনসার উদ্দিন শুভ অফিস চলাকালীন রোগীদের কাছ থেকে কৌশলে ৫০-১০০শ’ টাকা পরামর্শ ফি নিয়ে থাকেন। রোগীরা ফি না দিতে চাইলে তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এছাড়া মহিলা রোগীদের দেখার সময় আত্মীয়স্বজনদের কাছে থাকতে দেয়া হয় না। সরকারি ওষুধ থাকা সত্ত্বেও রোগীদের না দিয়ে মেডিকেল রিপ্রেনজেটিভদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে ব্যবস্থাপত্রে তার নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধ লেখেন। অফিস চলাকালীন বাইরে গিয়ে রোগী দেখেন। বেশির ভাগ সময় তাকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাওয়া যায় না।

 

আরও অভিযোগ রয়েছে, আনসার উদ্দীন শুভ তার অপর্কের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলে স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ভয় দেখান। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা এক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, মেডিকেল অফিসার আনসার উদ্দিন শুভ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সচিব এবং জাতীয় সংসদের চীপ হুইপ আ.স.ম ফিরোজের নাম ভাঙ্গিয়ে কোনো নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে যা ইচ্ছে তা করে চলছেন। অপরদিকে পরিদর্শিকা সামসুন্নাহার বেগম দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে চাকরি করা, সরকারি বাসভবনে বসবাস না করা, বৈদ্যুতিক মিটার হতে অন্যকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া, এমআর সেবা প্রদান করে জোড় পূর্বক রোগীদের নিকট থেকে অর্থ আদায়, সহকর্মীদের সাথে সু-সম্পর্ক না রাখা, নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে আত্মীয় হিসেবে পরিচয় দিয়ে অতিরিক্ত সুবিধা গ্রহণ এবং মিথ্যা কথা, মায়াকান্না ও অভিনয় করে বিভিন্ন অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করার সত্যতা পাওয়া গেলে তাকে গলাচিপার আমখোলায় বদলি করা হয়। অথচ সে নতুন কর্মস্থলে যোগদান না করে পরিবার পরিকল্পনার বিভাগীয় এক কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে অত্র কেন্দ্রেই বহাল থেকে যায়।

 

এ বিষয়ে উপজেলা এমওএমসিএইচ ডা: রফিকুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, অভিযুক্ত ওই চিকিৎসক এবং পরিদর্শিকার অনিয়ম নিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখির খবর আমি জানতে পেরেছি। তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা উপজেলা পর্যায়ে আমরা নিতে পারি না। বিভাগীয় কর্মকর্তারাই এসব ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন। সুতরাং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিষয়ে আমাদের ডিডি মহোদয়সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেই তারা ব্যবস্থা নিবে। এছাড়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে কোন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা কমিটি না থাকায় কর্মরতদের নিয়মিতকরণ ও অপকর্মের জবাবদিহিতার ব্যাপারে কেউ ভূমিকা রাখতে পারছে না। তাদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের হতদরিদ্র মানুষ। এই অবস্থায় ন্যূনতম স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এমনটাই দাবি ভুক্তভোগীদের।

Print Friendly, PDF & Email