পটুয়াখালীর মহিপুর থানার নারী পুলিশকনেষ্টবলের এ কেমন বর্বরতা!

মনিরুল ইসলাম মনিরুল ইসলাম

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১১:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩, ২০১৮ | আপডেট: ১১:৫০:অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩, ২০১৮

পটুয়াখালীর মহিপুর থানা পুলিশ মেসের বাবুর্চি নাজমা বেগম (৩৭) কেতুচ্ছ কারনে রাইফেল দিয়ে এক পুলিশ কনেষ্টবলের বর্বর নির্যাতন ঘটনার চারদিন পর সোমবার (২এপ্রিল) দুপুরে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেতাকে কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতাল থেকে আশংকাজনক অবস্থায় বরিশালেনেয়া হয়। ২৯ মার্চ দুপুরে ঘটনার পর পর থানায় ডাক্তার ডেকে তাকে প্রাথমিকচিকিৎসা দেয়া হয়।

কিন্তু নাজমার অবস্থার অবনতি দেখে অতি গোপনে তাকেকলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কিন্তু বিষয়টি ফাঁস হয়েযাওয়ার ভয়ে তিনদিন পর সেখান থেকে তাকে পুলিশ বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে নেয়া হয়কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে। কিন্তু নাজমার অবস্থার আরো অবনতিহতে থাকলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে বরিশাল রেফার করেন। বর্তমানে নাজমাবরিশাল শের-ই- বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।পুলিশ অসুস্থ্য নাজমার চিকিৎসার সকল দায়িত্ব নিলেও অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যেরবিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় মহিপুর থানাপুলিশের ভূমিকা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে।কুয়াকাটা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবারনাজমা বেগম জানান, গত ২৯ মার্চ (বৃহস্পতিবার) দুপুরের খাবারের শেষপর্যায়ে নির্বাচনী ডিউটি শেষে মহিলা পুলিশ কনেষ্টবল ইমি তাকে খাবারদিতে বলেন। কিন্তু ভাত শেষ হয়ে গেছে বলতেই রেগে যায় সে।

এক পর্যায়ে সেআমার গালে চড়-থাপ্পর মারে এবং মাথার পিছনে রাইফেল দিয়ে আঘাত করে। এতেআমি সাথে সাথে বেহুশ হয়ে যাই এবং বমি করতে থাকি। পরক্ষণে ওসি স্যারমহিপুর বাজার থেকে ডাক্তার ডেকে চিকিৎসা করান। পরে আমার অবস্থা খারাপদেখে আমার বোন নুরজাহানকে খবর দেন তারা।নাজমার বোন আলীপুর মৎস্য বন্দরের বাসিন্দা মোসা: নুরজাহান বেগম বলেন,খবর পেয়ে থানায় গেলে ওসি স্যার আমাকে কুয়াকাটা হাসপাতালে নিয়েযেতে বলেন। কিন্তু আমি কুয়াকাটা না নিয়ে কলাপাড়া উপজেলা হাসপাতালেনিয়ে যাই। এতেও পুলিশের লোকজন আমার সাথে রাগারাগি করেন এবংবিষয়টি কাউকে জানাতে নিষেধ করেন। এমনকি আমাদের আত্মীয়-স্বজনদেরও নাজানানোর জন্য বলেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনদিন পরে ১ এপ্রিলপুলিশ চাপ প্রয়োগ করে নাম কাটিয়ে কুয়াকাটা হাসপাতালে নিয়ে আসতেবাধ্য করেন। রাতে আমার বোন মারাত্মক অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ডাক্তার দ্রুত তাকেবরিশাল নিয়ে যেতে বলেন।নাজমার ভাই সোহেল জানান, ঘটনাটি ২৯ মার্চ ঘটলেও আমি খবর পেয়েছিসোমবার (২এপ্রিল) সকালে।

আমার বোনের অবস্থার এখনও কোন উন্নতিহয়নি। সোহেল আক্ষেপ করে আরও বলেন, দেশে কি কোন আইন নাই?, পুলিশ কিআইনের উর্ধ্বে??কুয়াকাটা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মনিরুজ্জামান বলেন,রোগীর মাথার পিছনের অংশে আঘাত রয়েছে। পরীক্ষা-নীরিক্ষা ছাড়া চিকিৎসাকরা সম্ভব হচ্ছিল না। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল রেফার করা হয়েছে।এ ব্যাপারে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ২৯মার্চ ইউপি নির্বাচনের দায়িত্ব পালনে আমি ব্যস্ত ছিলাম। পরে জেনেছিমহিলা কনেষ্টবলের সাথে বাবুর্চির ঝগড়া হয়েছে। বর্তমানে মাইক্রো ভাড়াকরে বরিশাল নিয়ে তাকে চিকিৎসা করানো হচ্ছে। মহিলা অনেক দিন থেকেইবিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিল। বিষয়টি তিনি এসপি স্যারকে জানিয়েছেনবলে জানান।

Print Friendly, PDF & Email