
আমতলীতে পুলিশের জব্দ করা টমটম থানায় পৌঁছে দেওয়ার অপরাধে দিন মজুর বাবা ছেলেকে পিটিয়ে গুরুতর জখম
আমতলীর দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামে পুলিশের জব্দ করা দুটি টমটম থানায় পৌঁছে দেওয়ার অপরাধে সোমবার সন্ধ্যায় মাদক বিক্রেতা আলম গাজীর নেতেৃত্বে দিনমজুর বাবা সোহেল মোল্লা (৩৮) ও ছেলে রাসেল (১৮) কে পিটিয়ে এবং কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকাল ১০টার সময় ৯৯৯ নম্বর থেকে আলম গাজীর বিরুদ্ধে মাদক বিক্রির খবর পেয়ে আমতলী থানার এএসআই মিজান সিকদার ঘটনাস্থলে যান। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আলম গাজী এবং তার বাড়ির সকল লোকজন আত্মগোপনে চলে যান। কোন উপায় না পেয়ে পুলিশ আলম গাজী এবং তার প্রতিবেশী আলামীন গাজীর ২টি টমটম জব্দ করে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ মোকলেছ এর মাধ্যমে হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রেখে আসে। ওই দিন বিকেল ৫টায় পুলিশের নির্দেশে আলম গাজীর প্রতিবেশী টমটম চালক দিন মজুর সোহেল মোল্লার ছেলে টমটম চালক রাসেল মোল্লা (১৮) ও বশির পহলানের ছেলে শামীম (১৭) মজুরির বিনিময়ে টমটম দুটি চালিয়ে আমতলী থানায় নিয়ে আসে।
এঘটনার পর সোমবার বিকেল ৫টার সময় রাসেল অফিস বাজার থেকে আলম গাজীর বাড়ির সামনে দিয়ে বাড়ি ফিরছিল। এসময় পুলিশের নির্দেশ মত টমটম থানায় পৌঁছে দেওয়ার অপরাধে সোহেলকে আটক করে আলম গাজী, জামাল গাজীসহ তার ৫ ভাই এবং মহিলারা মিলে ব্যাপক মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে দা দিয়ে কুপিয়ে তাকে রাস্তায় ফেলে রেন্ট্রি ও চাম্বল গাছের ডাল দিয়ে পিটিয়ে রক্তাত্ব জখম করে। এসময় রাসেলের ডাক চিৎকার শুনে তার বাবা সোহেল মোল্লা ছেলেকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসলে তাকেও বেধড়ক মারধর করে আলম গাজীর নেতেৃত্বে তার ভাইরা। বাপ ছেলেকে নির্দয় ভাবে পেটানোর খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে। পরে তাদের মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে মোখলেছুর রহমান চৌকিদারের মাধ্যমে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোহেলের মা রাশেদা বেগম কান্না জরিত কন্ঠে জানায়, পুলিশের কামে যাওয়ায় মোর পোলা রাসেল এবং স্বামী সোহেল মোল্লাকে আলম গাজী, জামাল গাজী, কামাল গাজী, মাঈনুদ্দিন গাজী, নিজাম গাজী মিল্যা মোর পোলা এবং স্বামীকে পশুর মত মাইরধইর করে। মোর স্বামী মাইরধইরের কারনে এহন রক্ত বমি করে। হ্যারে বাচাইয়া রাহা যাইবে কিনা হ্যা আল্লায় জানে।
স্থানীয় চৌকিদার মো: মোখলেছুর রহমান জানান, আলম গাজী এবং তার ভাইরা মাদক বিক্র এবং সেবনের সাখে জড়িত। তারা এ ঘটনায় তাদের কঠিন বিচার দাবী করেন। আমতলী হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মো: হারুন অর রশিদ জানান, ছেলে রাসেলের মাথাসহ সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আর তার বাবা সোহেল মোল্লাকে চাপা মার দেওয়া হয়েছে। লাঠির আঘাতে বুকে পিঠে কালো দাগ দেখা গেছে।
আমতলী থানার এসএসআই মিজানুর রহমান সিকদার জানান, আমার নির্দেশে জব্দ করা ২টি টমটম থানায় নিয়ে আসার অপরাধে রাসেল এবং তার বাবা সোহেল মোল্লাকে আলম গাজীর লোকজন পিটিয়ে গুরুতর আহত করে।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: সহিদ উল্যাহ জানান, পুলিশের কাজে সহযোগিতা করায় দিনমজুর বাবা সোহেল মোল্লা এবং ছেলে রাসেলকে নির্দয় ভাবে আলম গাজী এবং তার ভাইরা পিটিয়ে আহত করেছে। খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়। এব্যাপারে ওদেরকে মামলা দেওয়ার জন্য বলেছি। কঠিন বিচার করা হবে।