খালেদা কারাগারে বলে সরকার অমানবিক হবে না: কাদের

জি এম নিউজ জি এম নিউজ

বাংলার প্রতিচ্ছবি

প্রকাশিত: ২:৪৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩০, ২০১৮ | আপডেট: ২:৪৮:অপরাহ্ণ, মার্চ ৩০, ২০১৮

তিনি বলেছেন, “তিনি জেলে আছেন বলে তার প্রতি সরকার অমানবিক আচরণ করবে না। আমরা এই ধরনের সরকার না। অবশ্যই আমাদের দেশে সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। যদি সে রকম প্রয়োজন হয় অবশ্যই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”

শুক্রবার ঢাকার ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে কাদেরের এই বক্তব্য আসে।

আওয়ামী লীগের এই সংবাদ সম্মেলনের কিছু সময় আগেই নয়া পল্টনে আরেক সংবাদ সম্মেলনে আসেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

খালেদার জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ফখরুল অবিলম্বে তাকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানান, যাতে দেশে বা বিদেশে তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরে সাজায় রায়ের পর থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাখা হয়েছে ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে। হাই কোর্ট তাকে এ মামলায় চার মাসের জামিন দিলেও দুদক ও রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে ওই আদেশ আপিল বিভাগে আটকে গেছে।

বৃহস্পতিবার মির্জা ফখরুলের কারাগারে গিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করার কথা থাকলেও পরে তা স্থগিত করা হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, খালেদা জিয়া হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে কারা কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়েছে।

এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “বেগম জিয়া অসুস্থ আছেন- এটা বিএনপির মহাসচিব জোর গলায় উচ্চারাণ করেছেন। এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে তার যে ধরনের অসুস্থতা, তার উপর নির্ভর করে সু-চিকিৎসার জন্য অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

“সু-চিকিৎসা করার জন্য যা যা দরকার, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সু-চিকিৎসা যদি দেশে হয় তাহলে দেশে, আর বিদেশে নেওয়ার দরকার হলে তাই হবে।”

সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা কতটা গুরুতর, সে বিষয়ে চিকিৎসকদের পরমর্শ নিয়েই সব হবে।

“এটা কি টার্মিনাল ডিজিজ না নরমাল ডিজিজ সেটা দেখতে হবে। টার্মিনাল ডিজিজ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশের চিকিৎসকরা যদি বোর্ড বসিয়ে বলে যে বিদেশে পাঠাতে হবে, তাহলে পাঠাব। সেই পরামর্শ দিলে অবশ্যই পাঠানো হবে।”

এই সংবাদ সম্মেলনে বৃহস্পতিবার হয়ে যাওয়া স্থানীয় সরকারের ১৩৩টি প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন নিয়েও কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের হারের জন্য দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে দায়ী করে তিনি বলেন,“সত্যি কথা বলতে কি, বিএনপি যে কয়টা জায়গায় জিতেছে… এক-দুটি ছাড়া বাকি সবগুলো কিন্তু আমাদের বিদ্রোহী, আমাদের অর্ন্তকলহের ফলে তারা জিতেছে।”

ওই নির্বাচনের সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলো আওয়ামী লীগের প্রতি ‘সুবিচার করছে না’ বলেও অভিযোগ করেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা।

তিনি বলেন, “আজকেও একটা কাগজে দেখলাম যে চারটা এলাকায় আমরা হেরেছি শুধু সেগুলো তুলে ধরা হয়েছে। আরে পুরো চিত্রটা তুলে ধরুন। আমাদের প্রাপ্য কভারেজটুকু তো দেবনে। আমাদের যেখানে হার, শুধু সেখানের খবর নিয়ে আসেন তারা!”

দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে যারা প্রার্থী হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “অপরাধীদের শাস্তি না হলে অপরাধের প্রবণতা আরও বেড়ে যায়।”

অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দপ্তরর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন সংবাদ সম্মেলনে।

Print Friendly, PDF & Email