বরিশালে মনোনয়ন পেতে মরিয়া তিন নেতা

জি এম নিউজ জি এম নিউজ

বাংলার প্রতিচ্ছবি

প্রকাশিত: ৩:০২ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৯, ২০১৮ | আপডেট: ৩:০২:অপরাহ্ণ, মার্চ ২৯, ২০১৮

আসন্ন পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রশ্নে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়েছে বিএনপি। বর্তমান সরকারের সময়ে সকল স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করে এলেও এই যাত্রায় সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না নেতারা। চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দি থাকায় নতুন পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে তাদের সামনে। এই পটভূমিতে ভোটে যাওয়া নিয়ে নতুন করে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে দলে। নেতারা জানিয়েছেন, বেগম জিয়ার সঙ্গে আলোচনা করে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চান। এরমধ্যেেও নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছেন বরিশালের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। অবিযোগ রয়েছে দলীয় চেয়ারপার্সনকে কারামুক্ত করার আন্দোলন বেগবান করার চেয়ে নিজেদের আখের গুছাতে মরিয়া দখিনা বিএনপির জাদরেল তিন নেতা। এরা হলেন মজিবর রহমান সরোয়ার, বলিকিস জাহান শিরিন এবং এবায়দুল হক চান।

 

জানা গেছে, আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, সিলেট ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনে নির্বাচন হবে। বর্তমানে এই পাঁচ সিটিতে মেয়র হিসাবে দায়িত্বে আছেন বিএনপি নেতারাই। আগামী ৩১ মার্চ গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। পবিত্র মাহে রমজান শুরুর আগেই এই দুই সিটির নির্বাচন সম্পন্ন হতে পারে। ইতোমধ্যেই বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা নানাভাবে প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। পোস্টার-ব্যানার-বিলবোর্ডে ছেয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন এলাকাগুলো। কেন্দ্রে লবিং শুরু করেছেন প্রার্থীরা।

 

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ বিষয়ে দলে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সেটা দলীয় ফোরামে সিদ্ধান্ত হবে। সময়মত জানানো হবে। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজকের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বিনা অপরাধে আমাদের নেত্রী জেলে। তার জামিন নিয়ে টালবাহানা চলছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। এই প্রেক্ষাপটে আমরা কী করব, সিদ্ধান্ত নিইনি। দলীয় ফোরামে আলোচনা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে দল।

এদিকে গত রবিবার বিএনপির ছয় আইনজীবী পুরানো ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাত্ করে এসে সাংবাদিকদের জানান, দলের সিনিয়র নেতারা বেগম জিয়ার সাথে সাক্ষাত্ করবেন। তারা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।

 

এদিকে ৫ সিটিতে বিএনপির সিটিং মেয়র থাকলেও দলে তাদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে। মেয়র প্রার্থী হতে অনেক নেতাই দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন কেন্দ্রে। দলের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশ নেয় তবে বদল হতে পারে বরিশাল, খুলনা ও গাজীপুরের বর্তমান মেয়র প্রার্থীরা।

 

দলীয় সূত্র বলছে, বরিশালে বর্তমান মেয়র আহসান হাবিবের পরিবর্তে প্রার্থী হওয়ার জন্য জোর লবিং করছেন সাবেক মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান। দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি এবায়েদুল হক চানও প্রার্থী হতে ইচ্ছুক।

 

নেতাকর্মীদের অভিযোগ- খুলনার বর্তমান মেয়র ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি দলীয় আন্দোলন-সংগ্রামে কিছুটা নীরব ভূমিকা পালন করে আসছেন। ফলে অনেক নেতাকর্মী তাকে প্রার্থী হিসাবে পুনরায় চাচ্ছেন না। সেখানে নতুন প্রার্থী করা হতে পারে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, মহানগর বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু অথবা জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনাকে।

 

গাজীপুরের বর্তমান মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এ মান্নান অসুস্থ থাকায় সেখানে দলের কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি ও মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার ও বর্তমান মেয়রের ছেলে মঞ্জুরুল করিম রনি প্রার্থী হিসাবে লবিং করছেন। অধ্যাপক এম এ মান্নান বলেন, দল যদি নির্বাচনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে যে অবস্থাতেই থাকি নির্বাচনে অংশ নেব। সিলেটের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও রাজশাহীর মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল আবারো বিএনপির প্রার্থী থাকবেন বলে জানা গেছে।

Print Friendly, PDF & Email