
মোঃ রুকুনুজ্জামান বাবুল : দিনাপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলার মধ্যপাড়া গ্রামে এই পাথর খনিটি অপস্থিত। ১৯৭৭ সালে সমীক্ষা শেষে এস.এন.সি মত প্রকাশ করে যে, এ প্রকল্প কারিগরি এবং অর্থনৈতিক দিক থেকে নিরাপদ এবং লাভজনক হবে।
১৯৭৮ সালে সরকার কঠিন শিলা উৎপাদনের লক্ষ্যে মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনি প্রকল্প অনুমোদন করে। প্রকল্পটিতে অর্থায়ানের জন্য ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ সরকার উত্তর কোরিয়া সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে পেট্রোবাংলা এবং উত্তর কোরিয়া সরকারের পক্ষে ন্যাম ন্যাম (ঘঅগ ঘঅগ) নামক কোম্পানি চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর ১৯৯৪ সালের প্রথমদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পটির কার্যক্রম শুরু হয়।
মধ্যপাড়া খনির নির্মাণকার্য ত্বরান্বিত করা এবং দিনাজপুর জেলার মধ্যপাড়াতে পেট্রোবাংলার মধ্যপাড়া কঠিনশিলা খনি প্রকল্প পরিচালনার লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালের আগস্ট মাসে গঠিত কোম্পানি। বছরে ১৬ লক্ষ টন কঠিনশিলা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিযে মধ্যপাড়া ভূগর্ভস্থ কঠিনশিলা খনিটি নির্মিত হয়। ২০০৭ সালের মে মাস হতে এই খনি থেকে কঠিন শিলা উত্তোলন শুরু হয়। বর্তমানে গড়ে দৈনিক প্রায় ৫০০০ মেট্রিক টন শিলা উত্তোলন হচ্ছে।
বেশ ক’বছরের প্রশাসনিক জটিলতার নিরসন হলেও, এখন পর্যন্ত লাভের মুখ দেখেনি, দিনাজপুরে দেশের একমাত্র মধ্যপাড়া কঠিন শিলা প্রকল্পটি। খনিজ সম্পদ উৎপাদনের দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার প্রধান, জটিলতার কথা স্বীকার করে বলছেন- আগামীতে প্রশাসনিক সংকট উৎপাদনে বাধা হবে না। এদিকে, খনিজ ও জ্বালানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিদ্যুৎ জানিয়েছেন- কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন নিশ্চিত করা গেলে, পদ্মা সেতুসহ উন্নয়নমূলক মেগা প্রকল্পে ব্যবহার করা হবে এই খনির পাথর।
বাংলাদেশ তো বটেই, বিশ্বের একমাত্র ভূ-গর্ভস্থ কঠিন শিলার খনিটি উত্তরের জেলা দিনাজপুরে। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৪ সালে এখানে কঠিন শিলার বিপুল মজুদের তথ্য উঠে আসে ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের সমীক্ষায়।
দুই দশক পর, ১৯৯৪ সালে উত্তর কোরিয়ার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রাথমিকভাবে খনির কার্যক্রম শুরু করলেও, তা হোঁচট খায়। পেরিয়ে যায় বেশক’বছর। সবশেষ পাথর সমৃদ্ধ এই খনির উন্নয়নে বাংলাদেশ ও বেলারুশের যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেষ্ট কনসোর্টিয়াম এর সাথে চুক্তি করে খনি কর্তৃপক্ষ ও পেট্রোবাংলা।
সেই থেকে প্রতিদিন তিন শিফটে প্রায় ১ হাজার ফিট নিচ থেকে চলছে উত্তোলন কাজ। শুক্রবার খনিতে নতুন পাথরের স্তর বা স্টোপ উদ্বোধন করে সংশ্লিষ্ট প্রতিমন্ত্রী বললেন- আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় থমকে যাওয়া প্রকল্পটি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
খনির অচলাবস্থা অপ্রত্যাশিত জানিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলার প্রধান বলছেন- সম্প্রসারিত খনি থেকে অচিরেই প্রতিদিন মিলবে প্রায় পাঁচ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি পাথর।
১ দশমিক ৪ বর্গকিলোমিটার ব্যাপ্তির এই খনিতে ১৭২ মিলিয়ন মেট্রিক টন কঠিন শিলার মজুদ রয়েছে।#