জমিজমা বিরোধকে কেন্দ্র করে যুবক পিটিয়ে হত্যা প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ঘরে আগুন!

জি এম নিউজ জি এম নিউজ

বাংলার প্রতিচ্ছবি

প্রকাশিত: ৬:০০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৪, ২০১৮ | আপডেট: ৬:০০:অপরাহ্ণ, মার্চ ২৪, ২০১৮
বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ পটুয়াখালীর বাউফলে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে রাসেল (২৫) কে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে, এছাড়াও নয়জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনকে বরিশাল ও দুইজনকে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে হত্যার ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে শুক্রবার গভীর রাতে নিজেদের একটি টিনশেড ঘরে আগুন দিয়ে পালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১ টার দিকে রাসেল (২৫) নামে ওই যুবক বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিহত রাসেল উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের গুলিঠামৌজ গ্রামে মৃত ছাদের আলীর ছেলে।
গতকাল শনিবার সকালে সরেজমিনে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গুলিঠামৌজ গ্রামের মো. হানিফ মোল্লার সঙ্গে একই গ্রামের শহিদুল ইসলাম খানের দীর্ঘ কয়েক বছর পর্যন্ত জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছে। গত কয়েকদিন আগে শহিদুল ওই বিরোধপূর্ণ জমিতে জোরপূর্বক একটি দোকান ঘর নির্মাণ করেন। এ বিষয় নিয়ে শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে স্থানীয় আবুল কালাম সিকদারের সঙ্গে কথা বলছিলেন হানিফ। ওই সময় অদূরে থাকা শহিদুল (৪৫) ও তাঁর ছোট ভাই ফিরোজ (২৫) নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল লোহার রড, সাবল ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হানিফের ওপর হামলা চালায়। তাঁকে বাচাতে ছোট ভাই রাসেল এগিয়ে আসে। তখন তাঁকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। খবর পেয়ে তাঁর স্ত্রী লালমোন বেগম (২২) ও মা আনোয়ারা বেগম (৭০) সহ কয়েকজন স্বজন এগিয়ে গেলে তাঁদেরকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়।
পরে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে আহত রাসেল, হানিফ, লালমোন, আনোয়ারা, সাহিদা বেগম, আসাদুল হককে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাসেল, সাহিদা ও হানিফকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১ টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাসেল মারা যান।
মারা যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে রাত সাড়ে ১২ টার দিকে দ্বিতীয় দফায় চার-পাঁচজন লাঠিসোঁটা নিয়ে হানিফের ঘরে ঢুকে জয়ফুন নেছা (৬০) ও অন্তঃসত্তা রাশিদা বেগম (২৫) ও খাদিজা বেগমকে (১৯) মারধর করে।
রাশিদা বেগম বলেন, ওই সময় তাঁদেরকে রাসেলের মৃত্যুর ঘটনায় বাড়াবাড়ি না করার জন্য শাসিয়ে যায় এবং তাঁদের (হানিফ) লোকজনের ফাঁসানোর জন্য ফিরোজ তাঁর ঘরের মালামাল সরিয়ে নিয়ে নিজের ঘরে আগুন লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানার জন্য শহিদুল ইসলাম ও তাঁর ছোট ভাই ফিরোজের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ঘটনার সাথে জড়িতদের পরিবারের সবাই পলাতক থাকায় এ বিষয়ে কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন,‘নিহতের স্বজনেরা লাশের সঙ্গে বরিশালে। এ কারণে এখন পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Print Friendly, PDF & Email