রৌমারীর অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোয় সীমাহীন দুর্ভোগ: দেখার কেউ নাই
সাকিব আল হাসান সাকিব আল হাসান
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : দীর্ঘস্থায়ী জনদুর্ভোগে পরিণত হয়েছে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা। উপজেলার কাঁচা-পাকা মিলিয়ে প্রায় ৭৬টি সড়ক সংস্কারের জন্য প্রতি বছর অর্থ বরাদ্দ হলেও কোনো উন্নতি হয় না।
দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাগুলো সংস্কার না করায় যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছে ছয়টি ইউনিয়নের মানুষ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার দাঁতভাঙ্গা, শৌলমারী, বন্দবেড়, রৌমারী সদর, যাদুরচর ও চর শৌলমারী ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়ক গুলোর সবই গত বন্যায় ভয়ানক রকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ রৌমারী সদর ইউনিয়নের নটানপাড়া জামে মসজিদ থেকে রতনপুর আব্দুল রশিদের বাড়ি পর্যন্ত তিন কিলোমিটার পাকা রাস্তা, রৌমারী বিজিবি ক্যাম্প থেকে ইজলামারী নৌকা ঘাট পর্যন্ত চার কিলোমিটার পাকা রাস্তা, কর্তিমারী বাজার থেকে চুলিয়ারচর পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার পাকা রাস্তা ভেঙে চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পুরো রাস্তাই খানাখন্দে ভরা।
কাঁচা রাস্তাগুলোর অবস্থা আরো করুণ! বর্ষায় এক হাঁটু কাদা আর শুষ্ক মৌসুমে সমান গভীর ধুলার স্তর পড়ে। উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নে কাঁচা ও পাকা মিলে মোট ২৮ কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। এর মধ্যে চলাচলের অযোগ্য রাস্তাগুলো হচ্ছে— ইউনিয়ন পরিষদ মোড় থেকে যাদুরচর পূর্বপাড়া আমির হামজার বাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার, কর্তিমারী বাজার পূর্বপাশ থেকে কাশিয়াবাড়ী কুড়ার মাথা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার, যাদুরচর আবুল হাশেমের বাড়ি থেকে পূর্বপাড়া কাদেরের বাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার, যাদুরচর জামে মসজিদ থেকে উত্তরে ওয়াহেদের বাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার, গোলাবাড়ী ডিসি রাস্তা থেকে কাশিয়াবাড়ী দক্ষিণে কালু শেখের বাড়ি পর্যন্ত এক কিলোমিটার, যাদুরচর হাইস্কুল থেকে উত্তরে গার্লস স্কুল পর্যন্ত এক কিলোমিটার, লালকুড়া পাকা রাস্তা থেকে জিঞ্জিরাম নদী পর্যন্ত এক কিলোমিটার রাস্তা।
অন্যান্য ইউনিয়নেরও একই অবস্থা। এসব রাস্তার দুই পাশের পার্কিংয়ের ইট, খোয়া ও মাটিসহ ধসে পড়ে সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। কোথাও রাস্তার মাঝখানের পাথরসহ খোয়া উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো রাস্তায় আবার ব্রিজ কালভার্টের সংযোগ সড়ক ভেঙে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতি বছর টিআর, কাবিখা, কাবিটা, এলজিএসপি, এলজিইডি সহ বিভিন্ন প্রকল্প দেয়া হলেও নামমাত্র কাজ করে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়। অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে একাধিকবার অভিযোগ দেয়া হলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে কর্মসৃজন কর্মসূচির (মঙ্গা) শ্রমিক দিয়ে লোক দেখানো কিছু কাজ করা হয়। এসব অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে রৌমারী উপজেলা বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, যেহেতু আমি ওই সময় দায়িত্বে ছিলাম না, সে কারণে আমি কিছু জানি না। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।