
আগামী জুনে রাশিয়ায় বসছে ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের একুশতম আসর। বিশ্বকাপ আসর শুরুর আগেই ভক্তরা জার্সি সংগ্রহ করে, পতাকা টাঙিয়ে- নানাভাবে নিজেদের প্রিয় দলকে সমর্থন দেবেন। আর তাই বেশিরভাগ দলই একে একে তাদের হোম ও অ্যাওয়ে জার্সি উন্মোচন করছে। বেশিরভাগ দলের জার্সি তৈরিতে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো নকশা করার ক্ষেত্রে ফুটবলে দেশগুলোর গৌরবের সময়কাল মাথায় রেখেছে। এছাড়া জাতিগত ঐতিহ্যও তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে প্রত্যেক দেশের জার্সিতে। ৩২ দলের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৮টি দল তাদের জার্সি নিশ্চিত করেছে। দেখে আসা যাক দলগুলোর হোম ও অ্যাওয়ে জার্সি-
রাশিয়া: ১৯৮৮ সালের অলিম্পিকে বীরত্ব স্মরণে স্বাগতিক দেশটি লাল রঙের হোম জার্সি ব্যবহার করবে। দুই কাঁধে একটু বাঁকানো তিনটি সাদা স্ট্রাইপ থাকবে। সাদা অ্যাওয়ে জার্সিতে অনেক কালো ফোঁটা ব্যবহৃত হয়েছে। এটা দেশটির বৈশিষ্ট্য এবং অসংখ্য শহরের প্রতীক।
আর্জেন্টিনা: লিওনেল মেসিদের সেই বিখ্যাত আকাশি নীল-সাদা স্ট্রাইপের জার্সিতে কোনো পরিবর্তনই আসেনি। তবে অ্যাওয়ে জার্সিতে পরিবর্তন এসেছে। গাঢ় নীলের বদলে এই প্রথম তারা ব্যবহার করবে সম্পূর্ণ কালো জার্সি।
পর্তুগাল: ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর দলের জার্সিতে বিশেষ কিছুই নেই। মেরুন রঙের হোম জার্সির কলারে সবুজ ব্যবহৃত হয়েছে। তবে সাদা অ্যাওয়ে জার্সিতে ছোট ছোট সবুজ ফোঁটা ব্যবহৃত হয়েছে। এটাই সবার নজর কেড়েছে।
ফ্রান্স: ফ্রান্সের নীল রঙের হোম জার্সিতে এবার উঠে আসবে জাতিটির দেশপ্রেম। অ্যাওয়ে জার্সির রঙ হবে সাদা। সেখানে লেখা থাকবে, `বৈচিত্র্য আমাদের এক করে।`
ইংল্যান্ড: ইংলিশরা বিশ্বকাপে খেলবেন সাদা জার্সি ও নেভি ব্লু রঙের শর্টস পরে। সাথে থাকবে সাদা রঙের মোজা। অ্যাওয়ে জার্সিটি হবে লাল রঙের, সাথে সাদা শর্টস ও লাল মোজা।
কলম্বিয়া: কলম্বিয়ার হলুদ রঙের হোম জার্সিতে কাঁধে এবং দুইপাশে দেশটির জাতীয় পতাকার রঙের লাল ও নীল স্ট্রাইপ ব্যবহার করা হয়েছে। নীল রঙের অ্যাওয়ে জার্সির কলারে `এক অবিচ্ছিন্ন দেশ` কথাটি খচিত আছে।
বেলজিয়াম: ১৯৮৪ সালের পর প্রথমবারের মত বেলজিয়াম মেরুন-লাল রঙের জার্সি পড়ে খেলবে । সামনে রয়েছে হীরার আদলে নকশা। দলটির অ্যাওয়ে কিটের রঙ হলুদ, দুই কাঁধের উপর কালো ও লালের তিনটি স্ট্রাইপ রয়েছে।
স্পেন: স্পেনের হোম জার্সিতে উঠে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপের স্মৃতি। লাল রঙের এই জার্সির ডানপাশের কাঁধ থেকে নিচ পর্যন্ত একটা নকশা আছে। অ্যাওয়ে জার্সিটি হালকা ধূসর। তাতে লাল স্ট্রাইপ ব্যবহার করা হয়েছে।
জার্মানি: জার্মানিও তাদের হোম জার্সিতে `৯০ বিশ্বকাপের ছোঁয়া দিতে চেয়েছে। সাদা জার্সির বুকের অংশে কালো রঙের নকশা রয়েছে। মাঝখানে রয়েছে শেষ বিশ্বকাপ জয়ী দলের ব্যাজ। সবুজ অ্যাওয়ে জার্সির দুই পাশে কালো স্ট্রাইপ রয়েছে।
সুইডেন: সুইডেন তাদের ১৯৮৮ সালের জার্সির প্রতি সম্মান দেখিয়ে হলুদের সাথে কলারে নীল রঙ ব্যবহার করে তৈরি হোম জার্সি পড়বে। অ্যাওয়ে জার্সি ঠিক এর বিপরীত। নেভি ব্লু জার্সির কাঁধে তিনটি হলুদ স্ট্রাইপ।
উরুগুয়ে: উরুগুয়ের আকাশী নীল রঙের হোম জার্সির সামনে দেশটির একটি স্মৃতিস্তম্ভের নকশা আঁকা হবে। অ্যাওয়ে জার্সির রঙ সাদা। কলারে নীল রঙ ব্যবহৃত হয়েছে।
নাইজেরিয়া: ১৯৯৪ সালের বিশ্বকাপে নিজেদের প্রচেষ্টার স্মরণে নাইজেরিয়া সে সময়ের জার্সি থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছে। সবুজ রঙের মাঝে সাদার প্যাটার্ন ও দুই হাতের অংশে সাদার মাঝে কালোর প্যাটার্ন দিয়ে তৈরি হয়েছে হোম জার্সি। অ্যাওয়ে জার্সিতে ব্যবহৃত হয়েছে গাঢ় সবুজ রঙ।
সুইজারল্যান্ড: নিজেদের লাল রঙের হোম জার্সিতে দেশ ও তাদের পর্বতময় অঞ্চলের গৌরব ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছে সুইজারল্যান্ড। তবে কলারটি সাদা রঙের, ভি-আকৃতির। পর্বতের ছাপ ফুটিয়ে তলা হয়েছে জার্সি জুড়ে সাদা লাইনে। অ্যাওয়ে জার্সিটি সাদা এবং কলার লাল।
জাপান: জাপানের হোম জার্সিতে এবার গাঢ় নীল রঙ এবং উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সাদা সাদা ফোঁটা ব্যবহার করা হয়েছে। জাপানের মানুষদের কারিগরি দক্ষতা এবং দেশটির ঐতিহ্যবাহী সেলাই কৌশল থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই নকশা বেছে নেয়া হয়েছে। ১৯৯১ সালের হোম জার্সিটি নতুনভাবে উপস্থাপন করে এবার অ্যাওয়ে জার্সি হিসেবে ব্যবহার করবে জাপান।
মেক্সিকো: ১৯৯০ সালের নকশা থেকে অনুপ্রাণিত মেক্সিকোর হোম জার্সিতে দুই কাঁধে তিনটি করে সাদা স্ট্রাইপ থাকবে। অ্যাওয়ে জার্সিতে দেশটির পতাকার তিন রঙ সাদা, লাল ও সবুজ ব্যবহৃত হয়েছে।
মিশর : এই দলের হোম জার্সি সম্পূর্ণ লাল। কলারে কালো রঙ ব্যবহার করা হয়েছে। দুই পাশে তিনটি করে সাদা অ্যাডিডাস স্ট্রাইপ ব্যবহৃত হয়েছে।
সেনেগাল: সেনেগালের সাদা জার্সির দুই পাশে সবুজ লাইন ব্যবহার করা হয়েছে। জার্সির সামনে একটি নকশা সূচিত থাকবে।
পেরু: পেরুর জার্সিতে বিশেষ কিছু নেই। তবে দলটির ঐতিহ্যবাহী লাল রঙের লাইনটি ঠিকই আছে।
সূত্র : টেলিগ্রাফ ফুটবল।