
বগুড়ার বহুল আলোচিত শ্রমিকলীগ নেতা তুফান সরকারের পক্ষ নিয়ে মা মেয়েকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নিজ বাসায় নির্যাতন ও দু’জনের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া মামলার আসামি বগুড়া পৌরসভার সংরক্ষিত ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব আবদুর রউফ মিয়া স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব আবদুর রউফ মিয়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, বগুড়া শহরের চকসূত্রাপুর এলাকার জাহিদ হাসানের স্ত্রী ও বগুড়া পৌরসভার ২ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আ’লীগ নেত্রী মারজিয়া হাসান রুমকিসহ ১০ জন এবং অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় গত বছরের ২৯ জুলাই মামলা হয়। অভিযোগপত্র অনুসারে প্রধান আসামি তুফান সরকার ভালো কলেজে ভর্তির প্রলোভন দিয়ে গত বছরের ১৭ জুলাই সকাল সাড়ে ৮টায় এক কিশোরীকে শহরের চকসূত্রাপুরের নিজ বাড়িতে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে।
ঘটনা জানাজানি হলে মারজিয়া হাসান রুমকির হুকুমে আসামিরা ২৮ জুলাই বেলা পৌনে ৩টার দিকে ওই কিশোরী ও তার মাকে নিজ বাসা থেকে অপহরণ করে রুমকির বাসায় নিয়ে আসে। এরপর রুমকি ও অন্যরা প্রথমে কাঁচি দিয়ে মা ও মেয়ের মাথার চুল কেটে দেয়। এরপর নাপিত ডেকে ন্যাড়া করে দেয়। সেই সাথে তারা মারপিট করে দু’জনকে জখম করে।
প্রধান আসামি তুফান সরকার কিশোরীকে ধর্ষণ ও মা সহ মেয়েকে অপহরণ করে রুমকির বাড়িতে নিয়ে আটকে রেখে মারধর, যৌনপীড়ন ও চুল কেটে দেওয়ার ঘটনা পুলিশী তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার তদন্ত পরিদর্শক তদন্ত শেষে প্রাথমিক সত্যতার ভিত্তিতে গত বছরের ৯ অক্টোবর বগুড়ার দ্বিতীয় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এরপর গত বছরের ২০ ডিসেম্বর আদালতে তা গৃহীত হয়। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। খুব শিগগিরই চার্জ শুনানী হবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট আমান উল্লাহ।
বগুড়া পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমান জানান, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব আবদুর রউফ মিয়া ৮ মার্চ রুমকিকে সাময়িক বরখাস্তের চিঠিতে স্বাক্ষর করেন। ১৮ মার্চ তিনি ওই চিঠি হাতে পেয়েছেন। তিনি আরো জানান, কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকি গ্রেফতার হওয়ার পরপরই অন্য এলাকার কাউন্সিলরকে রুমকির এলাকার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তাই নাগরিক সেবার কোন সমস্যা নেই।
এ ছাড়া ওই মামলার প্রধান আসামীও কারাগারে রয়েছে। তবে নির্যাতিত মা ও মেয়ে অভিভাবকের হেফাজতে রয়েছে বলে জানা গেছে।