প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চট্টগ্রাম সফরে উদ্বোধন অথবা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হবে ৪১টি উন্নয়ন প্রকল্পের।
বুধবার সকালে চট্টগ্রামের বিএনএ এবং ঈসা খান প্যারেড গ্রাউন্ডে বিএন ডকইয়ার্ডকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) প্রদান এবং বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োগিত জনসভায় বক্তব্য দেবেন শেখ হাসিনা। পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জনসভার আগে চট্টগ্রামবাসীকে উপহার দেবেন এই ৪১টি উন্নয়ন প্রকল্প। এর মধ্যে ১৩টি প্রকল্প উদ্বোধন এবং বাকিগুলোর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।
গত ৩০ জানুয়ারি সিলেট থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর এটি শেখ হাসিনার চতুর্থ বিভাগীয় শহর সফর।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচার শুরুর পর ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল, ২২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী, ৩ মার্চ খুলনা সফর করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনটি সফরেই অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দেন শেখ হাসিনা।
তিনটি জনসভাতেই আওয়ামী লীগ সভাপতি সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে আগামী সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় আবার ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনার এমন জনসভা করে ভোট চাওয়ার সমালোচনা করে তাকে থামাতে নির্বাচন কমিশনে চিঠিও দিয়েছিল বিএনপি। তাদের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর সরকারি খরচে সফরে গিয়ে দলের হয়ে ভোট চাওয়া নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘন।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিএনপিকে পাল্টা কোনো চিঠি দেয়া না হলেও গণমাধ্যম কর্মীদেরকে কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে নির্বাচন কমিশনের কিছু করণীয় নেই। আর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা দলের জনসভায় অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে।
বেগম খালেদা জিয়াও প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বিএনপির জনসভায় অংশ নিয়ে ভোট চেয়েছেন তফসিল ঘোষণার আগে।
পটিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সেখানে চলছে প্রচার। তিন লক্ষ মানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ঘোষণাও এসেছে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের পাশাপাশি দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের একটি অংশও এখন বন্দরনগরীকে অবস্থান করছেন।
প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন যেসব প্রকল্প
মুরাদপুর, ২নং গেইট এবং জিইসি মোড় জংশনে আক্তারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভার, চট্টগ্রাম জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্স ভবন; কালুরঘাট-মনসারটেক জাতীয় মহাসড়কে (এন-১০৭) মিলিটারি সেতু; পটিয়া-চন্দনাইশ-বৈলতলী সড়কে খোদারহাট সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
কোতয়ালি থানায় মহিলা সমিতি স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও চান্দগাঁওয়ে হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজ পাঁচ তলা একাডেমিক ভবন এবং পটিয়ায় খলিল মীর ডিগ্রি কলেজ, পশ্চিম বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজ, ফটিকছড়ির হেয়াকো বনানী কলেজ, রাঙ্গুনিয়া মহিলা কলেজ ও মিরসরাইয়ে প্রফেসর কামাল উদ্দীন চৌধুরী কলেজে চার তলা একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন করা হবে।
নাজিরহাট মাইজভাণ্ডার সড়ক এবং পটিয়ার দক্ষিণভূর্ষিতে শেখ রাসেল ভাস্কর্য ও শেখ রাসেল মঞ্চও উদ্বোধন করা হবে।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন
চট্টগ্রাম শহরে লালখান বাজার হতে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রসেওয়ে, কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু হতে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক, চট্টগ্রাম শহররের জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল পুনঃখনন সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়নের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এর বাইরে চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজলোর সাঙ্গু ও ডলু নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প; কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট হতে বাকলিয়ার চর পর্যন্ত ড্রেজিং প্রকল্পও শুরু করবেন প্রধানমন্ত্রী।
অনন্যা ৩৩/১১ কেভি, ২০/২৬ এমভিএ নতুন জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ; কল্পলোক ৩৩/১১ কেভি, ২০/২৬ এমভিএ নতুন জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ; মাইজ্জারটেক ৩৩/১১ কেভি, ২০/২৬ এমভিএ নতুন জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ; রহমতগঞ্জ ৩৩/১১ কেভি, ২০/২৬ এমভিএ নতুন জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ; এফআইডিসি কালুরঘাট ৩৩/১১ কেভি, ২০/২৬ এমভিএ নতুন জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ; অক্সিজেন ৩৩/১১ কেভি, ২০/২৬ এমভিএ নতুন জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ; কাট্টলী ৩৩/১১ কেভি, ২০/২৬ এমভিএ নতুন জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণ; মনছুরাবাদ ৩৩/১১ কেভি, ২০/২৬ এমভিএ নতুন জিআইএস উপকেন্দ্র নির্মাণেরও উদ্বোধন হবে।
চট্টগ্রাম জেলার জরাজীর্ণ ও সংকীর্ণ কালারপোল-ওহিদিয়া সেতুর স্থলে ১৮০ মিটার সেতু নির্মাণ; কেরানীহাট-সাতকানিয়া-গুনাগরী জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন; পটিয়া-আনোয়ারা-বাঁশখালী টইটং আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন; বড়তাকিয়া (আবু তোরাব) থেকে মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চল সংযোগ সড়ক; বারৈয়ারহাট (চট্টগ্রাম জোন) হেঁয়াকো-নারায়নহাট-ফটিকছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্থকরণ ও উন্নয়ন; পটিয়া উপজলোর রাজঘাটা শ্রীমাই খালের উপর সেতু; ফটকিছড়ি উপজলোর নাজরিহাট-কাজরিহাট সড়কে খালের উপর ৫৪ মিটার সেতু নির্মাণেরও ভিত্তি স্থাপন করা হবে।
পটিয়া পিটিআই এর একাডেমিক ভবন; সীতাকুণ্ড টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ডবলমুরিংয়ে আগ্রাবাদ মহিলা কলেজ ও পোস্তারপাড় আছমা খাতুন সিটি করপোরেশন মহিলা কলেটে পাঁচ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ; খুলশীতে সরকারি মহিলা কলেজে ১০০ শয্যা ছাত্রী নিবাসের নির্মাণ কাজেরও ভিত্তি স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
বাকি প্রকল্পগুলো হলো চট্টগ্রাম মুসলিম ইনস্টিটিউট সাংস্কৃতিক কমপ্লক্সে স্থাপন; পটিয়া পৌর মাল্টি পারপাস কিচেন মার্কেট নির্মাণ; হর্টিকালচার সেন্টার এবং পটিয়ায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন।