কুসংস্কারে ভরা গ্রামের মানুষ

জি এম নিউজ জি এম নিউজ

বাংলার প্রতিচ্ছবি

প্রকাশিত: ১১:১৬ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৮, ২০১৮ | আপডেট: ১১:১৬:অপরাহ্ণ, মার্চ ১৮, ২০১৮
মুজিবুর রহমান,বাউফল(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি:
লিভার শরীরের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ন এবং সর্ববৃহত অঙ্গ। শরীরকে সুস্থ্য রাখতে প্রয়োজন সুস্থ্য লিভার। লিভারকে বলা হয় শরীরের পাওয়ার হাউজ যা জীবন ধারনের জন্য অপরিহার্য অঙ্গ । কিন্ত গ্রামের দিন মঝুর বা খেটে খাওয়া সহজ সরল মানুষগুলো প্রতিনিয়ত কোননা কোন ভাবে ক্ষনকার বা ফকির দ্বারা চিকিৎসার নামে কুসংস্কারের মধ্যে ডুবে আছে।
তেমনি একজন বাউফলের  বাজে সন্দিব  গ্রামের আবুল হোসেন দালালের পুত্র মো. মিল্লাত দালাল(২৫) । গত কয়েক দিন যাবৎ মো. মিল্লাতের  শরীরটা খারাব যাচ্ছিল । মুখে রুচি নেই, বমি বমি ভাব, প্রসাব হলুদ হচ্ছে এবং চোখও হালকা হলুদ রং হয়ে এসেছে। মো. মিল্লাতের বাবা এবং তার পরিবারের লোক অনুভাব করতে পারলো মিল্লাতের জন্ডিস অথবা লিভারে কোন সমস্যা হয়েছে। গ্রামের নিয়মানুযায়ী তাকে কোন স্থানীয় ফকিরের কাছে নিয়ে যেতে হবে, যার মাধ্যমে ঝাড় ফুক অথবা লিভারে বান মারলে সে সুস্থ্য হয়ে যাবে। গ্রাম বাংলার মানুষগুলো সরল বিশ্বাস ও অসচেতনার কারনে এখনও জন্ডিস হলে ফকিরের কাছে প্রথমে ছুটে যান  গ্রামের ফকিরের কাছে । অসুস্থ্য মো. মিল্লাত কে দেখে ফকির বলেন,ৃৃ তিনি খুব অসুস্থ্য হয়ে আছে এবং তার লিভারে সমস্যা হয়েছে কয়েক দিন পরে আনা হলে মিল্লাতের অনেক ক্ষতি হয়ে যেত।
ফকির মিল্লাতের প্রথমিক চিকিৎসা শুরুতে পূর্ব মুখি হয়ে যে কলা গাছের মোচা বের হয়েছে সেই মোচায় দোয়া পাঠ করে ১০১টি খেজুর গাছের কাটা ঢুকিয়ে রোগীর হাতে ধরিয়ে দেয় আর ফকিরের হাদিয়া বাবদ ১২০,টাকা নিয়ে নেন।  স্থানীয় সহজ সরল মানুষের জন্ডিস কিংবা হেপাটাইট্রিস নামক রোগের অনুভব  হওয়াাতে জন্ডিস কি জন্য হলো তা তাদের দৃষ্টির অগচরে থেকেই যায়। শুধু যে গ্রামে তা  এরকম নয় অহর অহর শহরের অলি-গলিতেও এরকম কিছু ভন্ড ফকিরের চিকিৎসা নামক প্রতারনার শিকার হয়ে থাকে সহজ সরল মানুষ জন ।
যারা ্চিকিৎ্সার নামে বিভিন্ন রং মিশ্রিত শরবত খাইয়ে, সাদা কাগজে রঙ্গিন কালি দিয়ে বরখাছ বানিয়ে, গলায় লতার মালা, দোয়া কালাম দিয়ে কবজ বানিয়ে রোগীদের গলায় কিংবা হাতে, ডাব নারিকেলে ফু দিয়ে, এবং কলার মোচায় খেজুর গাছের কাটা ঢুকিয়ে জন্ডিস ও লিভারের রোগ সারানোর অপচেষ্টা চালান। প্রকৃত পক্ষে এসব ক্ষেত্রে হেপাটাইটিস এ ও ই ভাইরাস স্বল্প মাত্রায় লিভারের প্রদাহ হযে জন্ডিস হয,যা বিশ্রামে থাকলে কিছুদিন পরে এমনিতেই কমে যায়।বরং মাঝখান থেকে উল্টোপাল্টা জিনিস সেবনে লিভারের উপর চাপ আরো বৃদ্বি পায়।বাংলাদেশের ৪.৪ থেকে ৭.৮ ভাগ লোক দেহে হেপাটাইট্রিস ভাইরাসের জীবানু বহন করে।
(স্বাস্হ বিঞ্জান ইনস্টিটিউট ও শিশুস্বাস্হ্য ফাউন্ডেশন) মতে, যারা হাসপাতালে আসে তাদেরও শতকরা ৪৩ ভাগ হেপাটাইটিস ’ই’ ভাইরাস জনিত,শতকরা ২২ ভাগ হেপাটাইটিস ’বি’,শতকরা ৮ ভাগ হেপাটাইটিস ’এ’ এবং ৩ ভাগ হেপাটাইটিস ’সি’ ভাইরাসজনিত এবং শতকরা ২৪ ভাগ অন্যান্য কারন দ্বারা আক্রান্ত।যৌনকর্মীদেও মধ্যে শতকরা ১৯.৭ ভাগ, এবং তা ক্রমান্নয়ে বাড়তেছে, যারা শিরায় মাদকাসক্ত তাদের মধ্যে শতকরা ৮.০ ভাগ হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্ত রয়েছে। শিশুদের মধ্যে শতকরা ১৫.৪ ভাগ হেপাটাইটিস বি ভাইরাস বহন করে।

Print Friendly, PDF & Email