পটুয়াখালীর দশমিনা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে তাল গাছ ও বাবুই পাখির বাসা। নামটি যেমন সুন্দর তেমনি সুন্দর তার শরিরের গঠন এবং সুন্দর তার নির্মান শৈল্পিক কারু কাজ। বহু যুগ ধরে শহরে বা গ্রামে মাঠে প্রান্তরে তাল গাছ দেখলেই চোখে পড়তো বাবুই পাখির সুন্দর দৃষ্টিনন্দন এক শৈল্পিক কারু কাজ খচিত বাবুই পাখির বাসা। তাল গাছের পাতায় পাতায় হেলে দুলে দৃষ্টি আকর্ষন করছে শত শত বাসা। পাতা থেকে কিছুটা নিচে ঝুলে এসেই তৈরী হয় বাবুই পাখির নিপুন হাতে গড়া স্বর্ণকমল বিছিষ্ট কাঁচা বাসা। দেখতে মন্দ না হলেও একটু অলস, আরাম প্রিয় ও পরভোগী প্রকৃতির চড়–ই পাখি। এদের বসবাস পরের বাসাবাড়িতে, বিভিন্ন চিলেকোঠায়। তাইতো কবি তার কবির ভাষায় চড়–ই আর বাবুইকে নিয়ে অসাধারণ কবিতা লিখে গেছেন।
তাল গাছ এখন আর সেদিনের মতো নেই। চিরচেনা এই ঐতিহ্যবাহী তাল গাছ বিলুপ্তের পথে আর সাথে সাথেই হারিয়ে যাচ্ছে বাবুই ও বাবুই পাখির বাসা। তাল গাছ আর বাবুই পাখির বাসা যেন একে অপরের সাথে কতো মিল।
শুধু বাবই আর চড়ই পাখিই নয় কালের আবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে পৃথিবীর নাম জানা না জানা বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে মিষ্টি মধুর কলতান আর প্রকৃতির মনোরম দৃশ্যপট। যুগে যুগে কবি সাহিত্যিকরা প্রকৃতির নানান রুপ নিয়ে লিখেছেন কতনা গল্প কবিতা। আজ ফেলে আসা দিন গুলির সাথে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মিলের গরমিল হয়েছে। বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আজ এই দৃষ্টি নন্দন মনোরম দৃশ্যগুলি কল্পনার মতো লাগে।
পৃথিবীর বুকে প্রকৃতির এক অপরুপ সুন্দর মনোরম দৃষ্টিনন্দন বাবুই পাখির বাসা। এমন দৃশ্য এমন প্রকৃতি হারিয়ে যাওয়ার আগেই প্রকৃতিতে প্রয়োজন তাল গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি করা। হাজার হাজার বনাঞ্চল হাজার হাজার রকম গাছ থাকলেও বাবুই পাখির বাসস্থান ও জন্ম বৃদ্ধির জন্য তাল গাছই প্রথম পছন্দ। কিন্তু এখন প্রশ্ন থেকে যায় বাবুই পাখি কেন তাল গাছে বাসা বাঁধে।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, বাবুই পাখির গুনের শেষ না থাকলেও রয়েছে প্রচন্ড রকমের ভয়। বিভিন্ন জন্তু, পোকামাকড়, শাপ, বিচ্ছুর হাত থেকে বাঁচতে তাল গাছের পাতায় কাটাকেই ঢাল হিসাবে নিয়েছে। পাতার আগার দিকে শেষ অংশ থেকে ঝুলে শুণ্যের উপরে তৈরী করেছে মনোরম বাসা যা বাতাসে দুলতে থাকে। প্রচন্ড ঝড় বাতাসে তাল গাছের বড় বড় পাতা গুলো বিভিন্ন ঝুকি থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। তাছাড়া প্রকৃতিতে মনোরম দৃশ্যটি কেবল তাল গাছেই শোভা পায়, এমনি ভাবে গভরি বুদ্ধিমত্তায় গড়ে উঠে বাবুই পাখির বাসা। সে কারনেই প্রকৃতিতে তাল গাছ ও বাবুই পাখির বাসা খুবই প্রয়োজন।