প্রধানমন্ত্রীর আগমনের জন্য প্রস্তত খুলনা, মনোনয়ন পেতে মরিয়া প্রার্থীরা
জি এম নিউজ জি এম নিউজ
বাংলার প্রতিচ্ছবি

আগামীকাল খুলনায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি। জনসভায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নৌকা প্রতীকে ভোট চাইতে পারেন প্রাধানমন্ত্রী। নৌকার টিকিট পাবার জন্য এই জনসভাকেই অন্যতম মাধ্যম মনে করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ফলে জনসভায় নিজের জনপ্রিয়তা তুলে ধরার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন তারা। একেক জন সম্ভাব্য প্রার্থী কম করে হলেও ১০ হাজার লোককে জনসভাস্থলে হাজির করার চেষ্টা করছেন।
২০১৩ সালের ২৪শে জানুয়ারি খুলনার সার্কিট হাউজ মাঠের জনসভায় সর্বশেষ বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে, ২০১৫ সালের ৬ই সেপ্টেম্বর খুলনা শিপইয়ার্ডে যুদ্ধ জাহাজের উদ্বোধন করেছিলেন তিনি। তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রথমবারের মতো জনসভায় বক্তৃতা করতে খুলনা আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীসহ জাতীয় নেতাদের ছবি, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ব্যানার ফেস্টুন ও তোরণে সেজেছে খুলনা। সভানেত্রীর জনসভা সফল করতে দল থেকে অর্ধশত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তার পাশাপাশি ৩ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা নিয়োজিত থাকবে।
জনসভা স্থলে আঞ্চলিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। সার্কিট হাউজ ময়দানের জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায় দলীয় নেতাকর্মীদের জন্য সিটি কর্পোরেশন ও জাতীয় নির্বাচনের নির্দেশনা দেবেন বলে আশা করছেন নেতা-কর্মীরা।
নির্বাচনী বছরে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার এই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারাই প্রার্থী হতে পারবেন যারা এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়- এমন ঘোষণার পরই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুলনায় আসছেন। তার সামনে এলাকায় জনপ্রিয়তা প্রদর্শনের এমন সুযোগ তাই হাত ছাড়া করতে চাইছেন না কেউ। জনপ্রিয়তা প্রদর্শনের মাধ্যমেই সম্ভাব্য প্রার্থীরা নৌকার টিকিট পেতে চাইছেন। খুলনার ছয়টি সংসদীয় আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইছেন এক ডজন প্রার্থী।
এরা হলেন খুলনা- ১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ্বাস, দাকোপ উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শেখ আবুল হোসেন, সাবেক সংসদ ননী গোপাল মন্ডল। খুলনা-২ আসনে (সদর ও সোনাডাঙ্গা) বর্তমান সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান। খুলনা-৩ আসনে (খালিশপুর-দৌলতপুর-খানজাহান আলী) বর্তমান সংসদ সদস্য মন্নুজান সুফিয়ান ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এসএম কামাল হোসেন।
খুলনা-৪ আসনে (রূপসা-তেরখাদা-দিঘলিয়া) বর্তমান সংসদ সদস্য এসএম মোস্তফা রশিদী সুজা, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. এম মশিউর রহমান ও সাবেক সংসদ মোল্লা জালাল উদ্দীন। খুলনা-৫ আসনে (ডুমুরিয়া-ফুলতলা) বর্তমান সংসদ সদস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ ও খুলনা জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. এম মাহাবুব উল ইসলাম। খুলনা-৬ আসনে (কয়রা-পাইকগাছা) বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ মোহাম্মদ নুরুল হক, সাবেক সংসদ সোহরাব আলী সানা ও খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আকতারুজ্জামান বাবু।
দলীয় সূত্র জানায়, বর্তমান সংসদ সদস্যরা তাদের স্থান ঠিক রাখতে এবং আগ্রহীরা নিজেদের জনপ্রিয়তা প্রদর্শন করে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ৩ মার্চের জনসভায় তারা নিজেদের অনুসারীদেরকে হাজির করবেন। এ জন্য তারা গেঞ্জি, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, তোরণ নির্মানের পাশাপাশি খাবার, পানি ও পরিবহনের ব্যবস্থাও করেছেন।
খুলনা-৬ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ মো. নুরুল হক বলেন, আমি আগামী জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। এলাকায় আমার সেই পরিমাণ জনপ্রিয়তাও রয়েছে। এই জনসভায় আমার এলাকা থেকে কম করে হলেও ১৫ হাজার লোকের সমাগম ঘটবে। এজন্য সব আয়োজন শেষ করেছি। কয়েক হাজার গেঞ্জিও তৈরী করেছি। এলাকাবাসী প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে কম করে হলেও ৪০ টি তোরণ নির্মাণ করেছে। এছাড়া যারা জনসভায় যাবে তাদের জন্য খাবার, পানি ও যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছি।
খুলনা-১ আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান দাকোপ উপজেলা পরিসদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শেখ আবুল হোসেন বলেন, দাকোপ থেকে তার অনুসারী ১০ হাজারের বেশি নেতাকর্মী জনসভায় উপস্থিত হবে। সবার যাতায়াত, খাবার, পানিসহ সব কিছুর ব্যবস্থা করা হয়েছে।